ঢাকা, শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ ||  শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প : ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আসবে জ্বালানি

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৫৯, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প : ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আসবে জ্বালানি

রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প : ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আসবে জ্বালানি

পাবনার রূপপুরে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত জ্বালানি (ইউরেনিয়াম) চলতি মাসের ২৮ তারিখের মধ্যে রাশিয়া থেকে দেশে এসে পৌঁছাবে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের কাছে ওই জ্বালানি রাশিয়া হস্তান্তর করবে বলে আশা করছেন কর্মকর্তারা।

গতকাল সোমবার এ উপলক্ষে ঢাকায় একটি প্রস্তুতি সভা হয়েছে। যেখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, মন্ত্রণালয়ের সচিব, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক, রাশিয়ার প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, জ্বালানি হস্তান্তর অনুষ্ঠানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সেখানে আলোচনার পর এর বিষয়বস্তু প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবকিছু চূড়ান্ত করবেন।

রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরমাণু শক্তি কমিশন বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের জেনারেল ডিজাইনার ও কনট্রাক্টর রাশিয়ার রসাটম করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রাশিয়া থেকে আমদানি পারমাণবিক জ্বালানি বিশেষ বিমানে ঢাকায় পৌঁছানোর পর তা সড়ক পথে নেওয়া হবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রথম ইউনিটের প্রথম ব্যাচের জ্বালানি রূপপুরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এরপর অক্টোবরের ৫ থেকে ৭ তারিখের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই জ্বালানি বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করবে রাশিয়া। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রূপপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে রাশিয়া থেকে ভার্চুয়ালি দেশটির প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি, রসাটমের মহাপরিচালক আলেপি লিখাচেভ সশরীরে উপস্থিত থাকবেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ইতিমধ্যে গত ৮ আগস্ট ডামি ফুয়েল (ইউরেনিয়ামের আদলে তৈরি নকল পারমাণবিক জ্বালানি দন্ড) দিয়ে পরিবহন, স্থানান্তর ও সংরক্ষণের কাজের মহড়া শেষ হয়েছে।

সূত্রমতে, রাশিয়া থেকে বিশেষ বিমানে সাতটি চালানের মাধ্যমে দেশে আনা হবে পারমাণবিক জ্বালানি, যা দিয়ে এক বছরের বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। এরপর ধাপে ধাপে আসতে থাকবে পারমাণবিক জ্বালানি।

প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ইউরেনিয়াম আমদানি এটা দেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় মাইলফলক। পারমাণবিক এ জ্বালানি আমদানি ও সংরক্ষণ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নিউক্লিয়ার ক্লাবে যুক্ত হবে।

বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি রেগুলেটরি এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পারমাণবিক জ্বালানি পরিবহনের ক্ষেত্রে বীমা অথবা আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলা আছে। যেহেতু পারমাণবিক জ্বালানি পরিবহনে ঝুঁকি নেই, তাই দ্বিতীয় অপশনটি বেছে নিয়েছে বাংলাদেশ।

সূত্রমতে, প্রাথমিক পর্যায়েই জ্বালানি পরিবহনে বীমা করা হলে এজন্য প্রতি বছর কিস্তি বাবদ যে অর্থ ব্যয় হবে তাতে বিদ্যুতের দামও বেড়ে যাবে। এসব দিক বিবেচনায় আর্থিক নিশ্চয়তাপত্র ইস্যু করেছে সরকার।

কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট থেকে ২০২৪ সালে এবং এরপরের বছর দ্বিতীয় ইউনিট থেকে ১২০০ মেগাওয়াট করে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এ প্রকল্পে রাশিয়া ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দেবে এবং বাংলাদেশ সরকার দেবে ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়