কৃচ্ছ্রসাধনে আগামী বাজেটেও থোক বরাদ্দ থাকছে না

নিউজ ডেস্ক

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ১২:০০ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ মঙ্গলবার

কৃচ্ছ্রসাধনে আগামী বাজেটেও থোক বরাদ্দ থাকছে না

কৃচ্ছ্রসাধনে আগামী বাজেটেও থোক বরাদ্দ থাকছে না

করোনা মহামারির পর থেকে অর্থনৈতিক সংকটের যে ধাক্কা শুরু হয়েছে তা এখনো কাটেনি। এ জন্য কৃচ্ছ্রসাধনের পথেই হাঁটছে সরকার। করোনা-পরবর্তী সব বাজেটে থোক বরাদ্দ প্রস্তাব না করার নির্দেশনা ছিল। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটেও কোনো ধরনের থোক বরাদ্দ প্রস্তাব করতে পারবে না মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো।এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

অতিসম্প্রতি অর্থ বিভাগ থেকে জারি করা বাজেট পরিপত্র-২তে এ কথা বলা হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রাক্কলন এবং ২০২৫-২৬ ও ২০২৬-২৭ অর্থবছরের প্রক্ষেপণ প্রণয়নের জন্য এই পরিপত্র জারি করেছে অর্থ বিভাগ। এই বাজেট প্রস্তাব আগামী ২৯ এপ্রিলের মধ্যে অর্থ বিভাগের বাজেট অনুবিভাগ (১ ও ২), পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পরিপত্রে বলা হয়, বাজেটে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সরকারের কৌশলগত উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়ক হয়, তেমন সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে এবং সাধারণভাবে বাজেটে কোনো ধরনের থোক বরাদ্দ প্রস্তাব করা যাবে না। অর্থাৎ অনুমোদিত ব্যয়ের বাইরে ভবিষ্যতে প্রয়োজন হতে পারে এমন অনুমান ভিত্তিক অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করা যাবে না।

এতে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় পর্যায়ের বাজেট প্রণয়নে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ত্রিপক্ষীয় (অর্থ বিভাগ-পরিকল্পনা কমিশন-সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও প্রতিষ্ঠান) সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা এবং ব্যয়সীমার আলোকে বিস্তারিত বাজেট প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ প্রয়োজনে সংশোধন ও পুনর্নির্ধারণ করতে হবে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয়ের প্রাক্কলন এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন তা মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদিত ব্যয়সীমার মধ্যে হয়।ত্রিপক্ষীয় সভায় আলোচনার ভিত্তিতে যে ব্যয়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, ওই ব্যয়সীমাই সর্বোচ্চ।

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রাক্কলনে চারটি নীতি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোতে বর্ণিত কৌশলগত উদ্দেশ্য এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, নির্বাচনী ইশতেহার ২০২৪, বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের নিজস্ব নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত সরকারের নীতি ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা এবং মধ্যমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনে সক্ষম হয়।

সরকারের মৌলিক নীতিনির্ধারণী দলিলগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দারিদ্র্য নিরসন, নারী ও শিশু উন্নয়ন, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবেলায় সহায়ক কার্যক্রমে বরাদ্দ বাড়াতে সক্ষম হয় এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী এবং নারী ও শিশু উন্নয়নে দেওয়া সেবার মান ও পরিমাণ যাতে বাড়ে।জিডিপি প্রবৃদ্ধির সঙ্গে পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় বাড়ার সামঞ্জস্য রাখা, যাতে বর্তমান কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যায়। বাজেট বরাদ্দের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।

এতে আরো বলা হয়েছে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ প্রণয়নে ত্রিপক্ষীয় সভায় নির্ধারিত মানদণ্ডের ভিত্তিতে প্রকল্পওয়ারি বরাদ্দ পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে পুনর্নির্ধারণ করা যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য দেওয়া মোট এডিপি ব্যয়সীমা কোনোভাবেই অতিক্রম করা যাবে না। ব্যয়সীমার মধ্যে প্রকল্প সাহায্য, নগদ বৈদেশিক মুদ্রার বাবদ ব্যয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রকল্প সাহায্য, নগদ বৈদেশিক মুদ্রা ইত্যাদি ব্যয় বিবেচনা করে প্রকল্পের প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ তৈরি করতে হবে। এ বাবদ ব্যয়সীমার অতিরিক্ত কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে না।

এ ছাড়া অননুমোদিত কোনো প্রকল্প বা স্কিমের জন্য কোনো বরাদ্দ প্রস্তাব করা যাবে না। অন্যদিকে, অনুমোদিত সব প্রকল্পের জন্য প্রক্ষেপণে বরাদ্দ রাখতে হবে। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এডিপিতে নতুন প্রকল্প অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রস্তাব পরীক্ষা করে প্রচলিত নিয়মে ব্যবস্থা নেবে পরিকল্পনা কমিশন।