রজব মাসে যেসব আমল পরিহার করবেন

মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ হাশেমী

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ০৯:১২ এএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ বুধবার

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

আরবি মাসগুলোর মধ্যে রজব মাসের গুরুত্ব অনেক বেশি। এই মাস রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণের প্রথম মাস। আরবি অন্য মাসগুলোর মতো এ মাসেও আইয়ামে বিজের তিন রোজা ও প্রত্যেক সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজা রাখা উত্তম।

রজব মাসে নেক আমল ও পাপ বর্জনের মাধ্যমে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। তওবা ও ইস্তিগফার করতে হবে। মোহমুক্তি ও পাপ পরিহার করার সক্ষমতা অর্জন করার চেষ্টা করতে হবে।

তবে আমল করতে গিয়ে এ কথা অবশ্যই স্মরণ রাখা উচিত, ইবাদত করতে গিয়ে যেন কোনো প্রকার কুসংস্কারে জড়িয়ে না পড়ি। রজব মাসে আলাদা নির্দিষ্ট নামাজ বা রোজা নেই, যা একমাত্র রজব মাসে আদায় করতে হয়। নফল নামাজ এবং নফল রোজা নিষিদ্ধ সময় ব্যতীত বছরের যেকোনো সময় আদায় করা যায়। আর রজব যেহেতু সম্মানী মাসের অন্তর্ভুক্ত, তাই অধিক পরিমাণে নফল নামাজ ও রোজা পালনে সচেষ্ট থাকতে হবে।

তবে রজবের বিশেষ রোজা হিসেবে ফজিলতপূর্ণ মনে করে রোজা রাখা সুন্নত নয়। বিশেষত, রজবের রোজাকে সুন্নত ও মুস্তাহাব মনে করে নফল রোজা রাখা ঠিক নয়। 

আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে, ২৭ রজবে রোজা রাখা অনেক ফজিলতপূর্ণ। এমনকি অনেকের মধ্যে এ বিশ্বাস রয়েছে যে, এই একটি রোজার ফজিলত এক হাজার রোজার সমান। এ জন্য তাকে হাজারি রোজা বলে অভিহিত করা হয়। অথচ এ রোজার ব্যাপারে সহিহ ও গ্রহণযোগ্য কোনো বর্ণনা নেই।

আল্লামা ইবনুল জাওজি, হাফেজ জাহাবি, তাহের পাটনি, আবদুল হাই লখনবি (রহ.) প্রমুখ প্রখ্যাত মুহাদ্দিস এ রোজার ফজিলতকে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট হিসেবে অভিহিত করেছেন। (কিতাবুল মাওদুয়াত, ইবনুল জাওজি, তালখিসুল মাওদুয়াত, তাজকিরাতুল মাওজুয়াত)।

অনেকের মাঝে আবার শবে মেরাজ উপলক্ষে বিশেষ নামাজ ও ইবাদতের প্রচলন রয়েছে। অধিকাংশ আলেমের মতে, শবে মেরাজ উপলক্ষে নামাজ বিদআত।

পরবর্তী যুগের আলেমগণের মধ্যে যারা এই মত ব্যক্ত করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন আবু ইসমাঈল আনসারি, আবু বকর সামআনি, আবুল ফযল ইবনে নাসির ও আবুল ফারায ইবনে জাওযি (রহ.)সহ আরও অনেক আলেম।

পূর্ববর্তী যুগের আলেমগণ এ ব্যাপারে আলোকপাত করেননি। কেননা এই বিদআত হিজরি চতুর্থ শতাব্দির পর প্রকাশ পেয়েছে। নবী করিম (সা.) এবং সাহাবায়ে কেরাম থেকে রজব মাসের রোজা সম্পর্কেও বিশুদ্ধ কোনো হাদিস বর্ণিত নেই। 

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে রজব মাসের ফজিলত অর্জনের তাওফিক দান করুন এবং সুন্নাহভিত্তিক আমল করে কুসংস্কার থেকে বেঁচে থাকার তওফিক দান করুন। আমিন!