ছোট গল্প: ত্যাগেই ভালোবাসার সফলতা

মো. ইমরান আলী

নতুনের সাথে আমরা

প্রকাশিত : ০২:৩১ পিএম, ২১ মার্চ ২০২৩ মঙ্গলবার | আপডেট: ০২:৩২ পিএম, ২১ মার্চ ২০২৩ মঙ্গলবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

এইচএসসি শেষে বাড়ি ফিরেছি। সকালবেলা দেখি পুকুরপাড়ে একটি মেয়ে! চোখ পড়তেই ভালো লাগার সূচনা। অপরিচিত মেয়ে। খোঁজ নিয়ে দেখলাম, মেয়েটির নাম মাবিয়া। সঙ্গে আছে মা ও ছোট ভাই। পাশের বাড়িতে এসেছে। ভারতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে।

আমার বাড়ি আবার সীমান্ত এলাকায়। একসময়ে অবৈধভাবে লোকজন বাড়ির পাশ থেকে বাংলাদেশ-ভারতে পারাপার হতো।

পাশের বাড়ির ভাবিকে বললাম, মেয়েটিকে পছন্দ হয়েছে। ভাবি একথা মাবিয়াকে বলতেই সে কেঁদে উঠলো। বলল, ‘আমার মা শুনলে আমাকে মারবে।’ ভাবিকে বললাম আমার ফোন নম্বরটা তাকে দিতে। যদি কখনো মন চায়, তাহলে ফোন দেবে।

মেয়েটি ভারতে চলে গেলো।

হঠাৎ সপ্তাহখানেক পর একটি ফোন। রিসিভ করতেই মাবিয়ার কণ্ঠ। এভাবে আমাদের কথা বলা শুরু। আস্তে আস্তে ভালো লাগা থেকে ভালোবাসা। প্রায় দুই বছর ফোনে কথা। দুজন দুই দেশে! হঠাৎ তিন মাস কথা বন্ধ। কোনো যোগাযোগ নেই।

একদিন বিদেশি নম্বর থেকে ফোন। রিসিভ করতেই মাবিয়া। বললাম, ‘এতদিন কোথায় ছিলে?’ মাবিয়া কেঁদে কেঁদে বলল, ‘আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। কোনোভাবে আমাকে নিয়ে যাও।’ বললাম, ‘তুমি চলে আসতে পারবে?’ উত্তরে হ্যাঁ বলল।

মামাকে বললাম, মাবিয়াকে ভারত থেকে আনতে হবে। মাকে জানালাম। মা বললেন, ‘তোমার জীবন, তোমার সিদ্ধান্ত!’ ভাবলাম, ওর বাবা নেই। কষ্ট দেওয়া ঠিক হবে না।

২০১৩ সালের ১৪ আগস্ট রাতে মাবিয়া এলো। ১৫ আগস্ট আমাদের বিয়ে হলো। নয় বছরের সংসার আমাদের। একটি কন্যাসন্তান আছে। অনেক ঝড় আমাদের জীবনে বয়ে গেছে। কখনো সে আমাকে ছাড়েনি। সাহস জুগিয়েছে সব সময়। পেছনে তাকিয়ে দেখেনি তার ছেড়ে আসা পরিবারকে!