জাতীয় স্বার্থ ও বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সদা প্রস্তুত : সেনাবাহিনীর প্রধান

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বৈশ্বিক পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সামরিক বাহিনীর পুনর্গঠনের সক্ষমতা আছে। জাতীয় স্বার্থ ও বিশ্বশান্তি রক্ষায় সামরিক বাহিনী সদা প্রস্তুত এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষায় সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। বৈদেশিক নীতি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তার সর্বোচ্চটুকু করছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে প্রতিরক্ষা কূটনীতি বিষয়ক এক সেমিনারে সেনাপ্রধান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীর মূল কাজ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। আমরা এটি কখনো ভুলি না। আমরা সবসময় এজন্য তৈরি। এক বন্ধুরাষ্ট্রকে খুশি করতে গিয়ে যেন অন্য রাষ্ট্রের বিরাগভাজন না হতে হয়, সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে।

মিয়ানমার সংকটের বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, সেদেশের নেতৃত্বের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে। তাদের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখাটা নিজেদের ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়ার মতো। কারণ, সব দেশই আমাদের বন্ধু। কাজেই একটি বন্ধুরাষ্ট্রকে খুশি করতে গিয়ে অন্য রাষ্ট্রের বিরাগভাজন হতে পারি না। এ বাস্তবতা আমাদের বিবেচনায় রাখতে হয়। নিরপেক্ষতা বজায় রেখে এমন অবস্থায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে যেটুকু করা সম্ভব, তা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইআইএসএসের চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবু বকর সিদ্দিক খান। আরো উপস্থিত ছিলেন- সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

সেমিনারে চারটি বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. এএসএম আলী আশরাফ উপস্থাপন করেন- ‘Evolving Notion of Defence Diplomacy and its Role in Achieving Foreign Policy Goals’; বিআইআইএসএসের রিসার্চ ফেলো এএসএম তারেক হাসান শিমুল উপস্থাপন করেন- ‘Growing Geopolitical Competition: Challenges and Opportunities of Defence Diplomacy for Bangladesh’; দক্ষিণ সুদান জাতিসংঘ মিশনের সাবেক ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) মাইন উল্লাহ চৌধুরী উপস্থাপন করেন- ‘Defence Diplomacy in United Nations and Other Overseas Missions: Horizon to Explore’ এবং ব্রুনাইয়ের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) মাহমুদ হোসেন উপস্থাপন করেন- ‘Existing Practices of Defence Diplomacy and Future Directions: the Case of Bangladesh’ শীর্ষক বক্তব্য। অধিবেশন শেষে একটি মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রবন্ধ উপস্থাপক ও আলোচকরা বলেন, একটি দেশের বৈদেশিক ও নিরাপত্তা নীতির উদ্দেশ্য পূরণে এবং কূটনৈতিক সম্পর্ককে এগিয়ে নেয়ার জন্য প্রতিরক্ষা কূটনীতি একটি কার্যকর কূটনৈতিক হাতিয়ার এবং সংকট প্রতিরোধের ব্যবস্থা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বাংলাদেশের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিরক্ষা কূটনীতিকে বিশ্বশান্তি রক্ষার্থে সশস্ত্র বাহিনীর ব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা দেশের জাতীয় স্বার্থ ও পররাষ্ট্র নীতির লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে।