ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

যে শহরে দিন হবে ২৬ ঘণ্টা!

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৪২, ২৫ এপ্রিল ২০২৪  

যে শহরে দিন হবে ২৬ ঘণ্টা!

যে শহরে দিন হবে ২৬ ঘণ্টা!

১২টার বদলে ঘড়িতে বাজবে ১৩টা! ২৪-এর বদলে ২৬ ঘণ্টায় থামবে দিন! এমন সময় হিসাব করে তেমন নতুন ঘড়ি চাইছে উত্তর নরওয়ের ভাডসোর মেয়র। এ ব্যাপারে ইউরোপীয় কমিশনকে একটি চিঠি লিখেছেন শহরের মেয়র। তার দাবি, শহরের জন্য নতুন ঘড়ির ব্যবস্থা করতে হবে। যে ঘড়িতে শুধু ১২টা নয়, ১৩টাও বাজবে।

উত্তর নরওয়ের এই পুর এলাকার শেষ জনসুমারি বলছে, এখানে সব মিলিয়ে ৫৮০৭ জন মানুষের বাস। অথচ আয়তনে নিউইয়র্ক শহরের থেকেও বড় এই সুমেরীয় শহর। তাই জনসংখ্যা নিয়ে সন্তুষ্ট নন শহরের মেয়র।

মেয়র চান আরও মানুষ এসে বসবাস করুন ভাডসোতে। নতুন বাসিন্দাদের আকর্ষণ করতে এ যাবৎ নানা পদক্ষেপ করেছেন তিনি। তাতে লাভ হয়নি। এ বার তার বাজি ওই বিশেষ ঘড়ি!

নরওয়ের এই শহরের ঠান্ডাই বেশি। গরম থাকে মাস পাঁচেক। সেই সময়েও ১৫ থেকে ৩০ ডিগ্রির মধ্যে থাকে তাপমাত্রা। শীতে পারদ নেমে যায় হিমাঙ্কের প্রায় ২০ ডিগ্রি নীচে। অর্থাৎ এই শহর একেবারে বাসযোগ্য নয়, তা নয়।

পর্যটনের জন্যও ভাডসো আকর্ষণীয়। নিজস্ব বিমানবন্দর আছে। আছে মাছ ধরার পোত। ভাডসোর জঙ্গলে বল্গা হরিণও আছে প্রচুর। তবে ভাডসোর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ রাতের আকাশে নানা রঙের মেরুপ্রভা।

সত্ত্বেও জনবসতি কম এই অঞ্চলের। পরিষেবা দেওয়ার জন্য লোকের অভাব পড়ে মাঝে মধ্যেই। শহরের মেয়র জানিয়েছেন, ওই নতুন ঘড়ি ভাডসোয় বাড়তি পর্যটক এবং বাসিন্দাদের নিয়ে আসতে পারে। কী ভাবে তা-ও ব্যাখ্যা করেছেন মেয়র। তার কথায়, সময়ই আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি মূল্যবান। ভাডসোয় নতুন ঘড়ি এলে দিনে দু’টি ঘণ্টা অতিরিক্ত পাওয়া যাবে।

১২টার বদলে দু’বার ১৩টা বাজবে ওই ঘড়িতে। ফলে ১২+১২=২৪ এর বদলে ১৩+১৩=২৬ ঘণ্টা পাওয়া যাবে। কিন্তু সত্যিই কি ঘড়ি বদলে ফেলে সময়ের চলন বদলানো সম্ভব? সময় তো চলে আন্তর্জাতিক হিসাবে। সেখানে হঠাৎ ঘড়ির নকশা বদলে ২টি অতিরিক্ত ঘণ্টা সময় পাওয়া যাবে কী ভাবে?

ভাডসোর মেয়রকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, সেই ঘড়ি কি আদৌ বানানো হয়েছে? জবাবে মেয়র হেসে জানিয়েছেন, বানানো হয়নি। বানানোর প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেননি তিনি।

কারণ হিসাবে ভাডসোর মেয়র বলেছেন, তিনি নিশ্চিত ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের এই আজগুবি আবদারে সায় দেবে না। তাই ঘড়ি বানানোর কথা ভাবেনইনি তারা।

তা হলে আবেদন করেছেন কেন? প্রশ্ন শুনে মেয়রের যুক্তি, আসলে আমরা ভাডসোর জীবনযাপনের বিজ্ঞাপন করতে চেয়েছি এ ভাবেই। ঘড়ির কাঁটায় না হলেও এই শহরে থাকলে অতিরিক্ত সময় হাতে পাওয়া যায়।

মেয়রের কথায়, এখানে অফিস পৌঁছনোর জন্য দৌড়ে বাস ট্রেন ধরা নেই। সাধারণ মানুষ হয় ব্যবসা করেন না হয় কাজ করেন কাছেপিঠে পরিষেবা শিল্পে। ফলে সময়ে বাড়ি ফিরে পরিবারের সঙ্গে কাটানোর সময় পান বেশি।

ভাডসো প্রধান জানিয়েছেন, এই সময় অত্যন্ত বিরল যা বড় বড় শহরে পাওয়া যায় না। তাই ভাডসোর ঘড়িতে বাস্তবেই সময় বেশি। কিন্তু যদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন সত্যিই ভাডসোর দাবি মেনে নেয়? তা হলে কি ১৩টা বাজা ঘড়ি বানাতে পারব ভাডসো। জবাবে মেয়র জানিয়েছেন, আগে তো মানুক, তার পরে না হয় দেখা যাবে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়