ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ঈদুল আযহা উপলক্ষে যুক্ত হবে ভারতের ৪ লোকোমোটিভ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:৪২, ৩ জুন ২০২৩  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

আগামী ২৯ জুনকে ঈদুল আযহার দিন ধরে ট্রেনে ঘরমুখো মানুষের যাত্রার ব্যবস্থাপনা ঠিক করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এরই মধ্যে অগ্রিম টিকিট বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আন্তঃনগর ট্রেনের সুষ্ঠু চলাচল নিশ্চিতে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারমধ্যে একটি সিদ্ধান্ত হলো ভারত থেকে অনুদান পাওয়া লোকোমোটিভগুলোর অন্তত ৪টি ঈদযাত্রায় যাত্রী পরিবহনে ব্যবহার করা। 

সম্প্রতি বাংলাদেশকে ডিজেল চালিত ২০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) অনুদান হিসেবে দেয় ভারত। গত ২৩ মে সন্ধ্যার দিকে সেগুলো বাংলাদেশে আনা হয়। ৩ হাজার ৩০০ হর্সপাওয়ারের লোকোমোটিভগুলোর অ্যাক্সেল লোড ১৯.৫ টন এবং গড় বয়স ৮-১০ বছর।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, লোকোমোটিভগুলো এনে প্রথমে দর্শনা ইয়ার্ডে রাখা হয়। সেখান থেকে ঈশ্বরদী লোকোশেডে আনা হয়। পরে ২টি লোকোমোটিভ নেওয়া হয় দিনাজপুরের পার্বতীপুরের কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানায় (কেলোকা)। সেখানে লোকমোটিভগুলোর রং পরিবর্তন করা হচ্ছে। 

জানা গেছে, বাংলাদেশে বর্তমানে মোট লোকোমোটিভের সংখ্যা ৩০৭টি। এর মধ্যে ১১০টি ব্রডগেজ এবং ১৯৭টি মিটার গেজ। সচল আছে মোট ২৭১টি। বাংলাদেশ রেলওয়ের ৪০০টি ট্রেনের জন্য এই লোকোমোটিভের সংখ্যা অপ্রতুল। সচল থাকা লোকোমোটিভগুলোর মধ্যে আবার আয়ুষ্কাল পার করেছে অনেকগুলো। ফলে বেশিরভাগ লোকোমোটিভেরই সময় কাটে সার্ভিস কারখানায়।

রেলওয়ের মানদণ্ড অনুযায়ী, প্রতিদিন মোট লোকোমোটিভের ২০ শতাংশ সার্ভিসে এবং ৮০ শতাংশ অপারেশনে থাকার কথা। কিন্তু কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুরোনো লোকোমোটিভগুলো প্রায়ই নিতে হয় কারখানায়। অপারেশনের চেয়ে তাদের সার্ভিসে থাকার অনুপাত এখন বেশি।

ভারত থেকে পাওয়া লোকোমোটিভগুলো কীভাবে বাংলাদেশের রেলবহরে ব্যবহার করা হবে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের যুগ্ম-মহাপরিচালক (লোকো) ইঞ্জিনিয়ার মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ভারত লোকোমোটিভগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই দিয়েছে। আমরাও করছি। ২০টি লোকোমোটিভের মধ্যে বর্তমানে ঈশ্বরদীতে আছে ১৮টি এবং কেলোকাতে আছে ২টি। আমরা কেলোকাতে লোকোমোটিভগুলোতে বাংলাদেশি ইউনিফর্মের রং করছি। আশা করি ঈদের আগে অন্তত ৪টি লোকোমোটিভ প্রস্তুত হয়ে যাবে। এগুলো ঈদযাত্রায় রেলবহরে যুক্ত হবে। 

লোকোমোটিভগুলোর মেইনটেন্যান্স সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমানে যে ২০টি লোকোমোটিভ আমাদের দেশে এসেছে সেগুলো আমাদের দেশের ৬৫ এবং ৬৬ সিরিজের লোকোমোটিভগুলোর মতো। ভারত থেকে কেনা সেই লোকোমোটিভগুলোর জন্য যেভাবে স্পেয়ার পার্টস বা অন্যান্য অংশ সংগ্রহ করি, এই ২০টি লোকোমোটিভের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হবে। মেইনটেন্যান্সও একইভাবে করা হবে।

এর আগে রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ট্রেনে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে এবং অতিরিক্ত যাত্রী চাহিদা মেটাতে মোট ৬৫টি (পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ৪০টি এমজি ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ২৫টি) বিজি যাত্রীবাহী কোচ সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এছাড়া অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ২১৮টি (পূর্বাঞ্চল ১১৬টি ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে ১০২টি) লোকোমোটিভ ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, গত বছরের ৩০ নভেম্বর রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে ৭ সদস্যের একটি পরিদর্শক দল অনুদানের লোকোমোটিভগুলো দেখতে ভারতে যান। তারা গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর রেলপথ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেন। 

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ভারতে ৩৪টি লোকোমোটিভ দেখে পরিদর্শক দল। এর মধ্যে কারিগরি বিষয়গুলো মূল্যায়ন করে ২০টি লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে নেওয়ার জন্য নির্বাচন করা হয়। বাংলাদেশের রেলপথ, স্টেশন, সিগন্যাল ব্যবস্থাসহ সামগ্রিক রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হবে এমন লোকোমোটিভগুলো নির্বাচন করা হয়।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়