উদ্বোধনের অপেক্ষায় বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার
নিউজ ডেস্ক
উদ্বোধনের অপেক্ষায় বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার
নির্মাণ কাজ শুরুর পর থেকে করোনা মহামারীসহ নানা প্রতিবন্ধকতা পেছনে ফেলে এবার রাজশাহীতে পূর্ণ দৃশ্যমান হয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার’। এটির সব ধরনের অবকাঠামোর কাজ শেষ হয়েছে।
রাজশাহী নগরীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও বোটানিক্যাল গার্ডেন সম্মুখ অংশে দুই দশমিক তিন শূন্য একর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠছে এই নভোথিয়েটার। ইতোমধ্যে অবকাঠামো কাজ শেষ হওয়ায় মাথা তুলেছে নভোথিয়েটার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মূল অবকাঠামোর কাজ শেষ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, এ নভোথিয়েটারে আধুনিক প্রযুক্তির ডিজিটাল প্রজেক্টর সিস্টেমযুক্ত প্ল্যানেটরিয়াম, ৯-ডি, ৫-ডি হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কর্নার, সাইন্টিফিক লাইব্রেরি, টেলিস্কোপ, কম্পিউটারাইজড টিকেটিং অ্যান্ড ডেকোরেটিং সিস্টেমসহ নানা সুবিধা ইতোমধ্যে সন্নিবেশিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১২ সালে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের উদ্যোগেই প্রকল্পটি গ্রহণ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। শুরুতে ২২২ কোটি তিন লাখ টাকা ব্যয় ধরে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার, রাজশাহী’ শীর্ষক প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিল রাসিক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্পটি এখন বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।
রাজশাহীতে নির্মিত দেশের সেই সর্বাধুনিক এ নভোথিয়েটার উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে আগামী সেপ্টেম্বরেই। এরইমধ্যে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন এ প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হবে যে কোনোদিন।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০১৮ সালে ২৩২ কেটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান উদ্যানের সামনে নির্মাণ শুরু হয়। নানা প্রতিবন্ধকতা যেমন করোনা মহামারী এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ কাটিয়ে যার কাজ শেষ হয় চলতি বছরের জুলাইয়ে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের সর্ববৃহৎ পরিধির এ স্থাপনায় ইতোমধ্যে সন্নিবেশিত করা হয়েছে প্ল্যানেটেরিয়ামসহ ফাইভ-জি হল ও আধুনিক অবজারবেটেড টেলিস্কোপ, যা দেশে প্রথম। ইতোমধ্যে ট্রায়ালও দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ জানান, এ প্রকল্পে শুধু ভবন তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ১৪০ কোটি টাকা। বাকি অর্থ ব্যয় হয়েছে নভোথিয়েটারের যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য খাতে। শুধু প্ল্যানেটেরিয়াম ছাড়াও এখানে রয়েছে বিশাল জায়গা। যে কোনো বিজ্ঞান প্রদর্শনী ছাড়াও চাইলে শিক্ষাবিষয়ক নানা অনুষ্ঠান এখানে করা সম্ভব।
তিনি বলেন, এখানে স্থাপন করা হয়েছে বিশ্বের আধুনিক টেলিস্কোপ, যা দিয়ে গবেষকরা নভোমন্ডলের গবেষণা আরও এগিয়ে নিতে পারবেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্পটি গণপূর্ত অধিদপ্তর যথাযথ গুণগতমান বজায় রেখে নির্মাণ করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখানে স্থাপন করা হয়েছে আধুনিক ডেকোরেশন। লাইটিং, ভবনের সম্মুখে সুদৃশ্য পানির ফোয়ারা। পুরো ভবনে সেন্ট্রাল এসি স্থাপন করা হয়েছে। টিকিটিং সিস্টেম পুরোপুরি অটোমেটেড ও ডিজিটাল। আধুনিক ফায়ার প্রটেকশন ও ডিটেকশন ব্যবস্থাসহ নিরাপত্তা নিশ্চিতে লাগানো হয়েছে ১৪০টিরও বেশি সিসি ক্যামেরা।
দর্শনার্থীদের জন্য এখানে তৈরি করা হয়েছে অন্তত ১০০টি কার পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। সবমিলিয়ে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আধুনিক ভবন হতে যাচ্ছে এ বিজ্ঞান গবেষণা ও মহাকাশ প্রদর্শনী কেন্দ্রটি।
তবে উদ্বোধনের পর দিনে কয়টি শো এখানে চলবে বা টিকিটের দাম কত হবে, তা এখনো জানানো হয়নি। সেটি ঠিক করবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। খুব শীঘ্রই গণপূর্ত বিভাগ এ ভবনটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করবে বলে জানা গেছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ আরও বলেন, আশা করা হচ্ছে আগামী সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করবেন।
এদিকে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রকল্পের মূল আকর্ষণ প্ল্যানেটেরিয়ামের কাজ শেষ। চওড়া সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে তিনতলায় যেতে ভেতরে দুটি বড় সিঁড়ি ছাড়াও রয়েছে লিফট ও এস্কেলেটর। তৃতীয় তলায় পূর্ব উত্তর কোনায় বসানো হয়েছে গম্বুজ। কক্ষটিতে প্রবেশ করতে হচ্ছে জুতা খুলে। কারণ ভেতরে খুবই স্পর্শকাতর যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া মেঝেতে বিছানো হয়েছে মূল্যবান মাদুর। সারি সারি লাল রঙের আরামদায়ক চেয়ার স্থাপন করা শেষ। কম্পিউটারের মাধ্যমে অপারেট করা হবে এ প্রদর্শনী কেন্দ্রটি।সফটওয়্যার চালুর সঙ্গে সঙ্গে ক্লিক করলেই গম্বুজের চারপাশ থেকে হালকা আলোতে আলোকিত হবে মাথার ওপরের সাদা পর্দা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, অসীম মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য থেকে পৃথিবীর সৃষ্টি, সূর্য, চাঁদ, গ্রহ, নক্ষত্র সবই এক পর্দায় ভেসে উঠবে এ নভোথিয়েটারে। নিখুঁত সাউন্ডের জন্য পুরো হলে লাগানো হয়েছে ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম, যা প্রদর্শনীর মাধ্যমে নিয়ে যাবে সরাসরি মহাশূন্যে গ্রহ-নক্ষত্রের খুব কাছে। একসঙ্গে দেড়শ জন এমন আসনগুলোতে বসে অসীম মহাকাশের গ্রহ-নক্ষত্রের খুঁটিনাটি সম্পর্কে জানতে ও দেখতে পারবেন।
দিনে অন্তত ৬-৭টি শো চালানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে শিশুরা বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহী হবে। বিজ্ঞান মনস্করা আধুনিক টেলিস্কোপের মাধ্যমে নভোম-ল প্রত্যক্ষ ও গবেষণায় যুক্ত হতে পারবেন।
এমন একটি প্রতিষ্ঠান রাজশাহীতে পেয়ে খুশি বিজ্ঞান প্রিয়রা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক সাজ্জাদ বকুল বলেন, এটি অবশ্যই নগরবাসীর জন্য খুবই ভালো সংবাদ। কিন্তু এটি যেন শুধু দর্শনার্থীদের জন্য বিনোদনের কেন্দ্র না হয়ে ওঠে। প্রতিষ্ঠানটিতে বিজ্ঞান চর্চা, মহাকাশ নিয়ে পড়াশোনা ও ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ থাকতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
- আগামী ৯ মার্চ ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন
- মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ গড়তে হবে: মেয়র টিটু
- ২ মন্ত্রী পেয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগ
- কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচরে প্রাথমিক পর্যায়ের বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত
- ময়মনসিংহের হোটেল ও রিসোর্ট এর তালিকা সমূহ
- ময়মনসিংহে প্রধানমন্ত্রীর আগমনে উদ্বোধন হবে শতাধিক প্রকল্প
- ফের ময়মনসিংহ নগরীতে ভোটের হাওয়া
- ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইলে প্রতিটি কাঁঠাল গাছে শোভা পাচ্ছে মুচি
- বিবিসির ১০০ নারীর তালিকায় ময়মনসিংহের নান্দাইলের সানজিদা
- ময়মনসিংহ মুক্তাগাছার মণ্ডা, স্বপ্নে পাওয়া মিষ্টির সুনাম ২০০ বছরেও কমেনি