ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

এক বোতল পানির দাম ৫১ লাখ!

ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:১০, ৪ অক্টোবর ২০২২   আপডেট: ১৫:০৬, ২৫ অক্টোবর ২০২২

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

এক লিটার পানি কিনতে আমাদের কত খরচ হয়? খুব বেশি হলে ২০ বা ৩০ টাকা। কিন্তু ৭৫০ মিলিলিটার পানি কিনতে যদি ১৫ হাজার টাকা বা চার লাখ টাকা খরচ হয়, তা হলে? অবাক হচ্ছেন তো! এমনও পানীয় আছে যার এক বোতলের দাম কয়েক হাজার থেকে কয়েক লাখ টাকা। কেমন সেই পানি, কোথায় পাওয়া যায়, সে সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক- 

ফাইন: জাপানের এই পানি প্রাকৃতিক ভাবে পরিশ্রুত। মাউন্ট ফুজির আগ্নেয় পাথরে পরিশ্রুত এই পানি খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ এবং দূষণ মুক্ত। এই পানির একটি বিশেষত্ব হলো, এতে সূক্ষ্ম একটা গন্ধ আছে। ২০০৫ সালে ফাইন এই পানির ব্যবসা শুরু করে। এই পানির ৭৫০ মিলিলিটারের দাম ৫ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪২৫ টাকা।

তাসমানিয়ান রেন: স্বাস্থ্যকর এই পানির ৭৫০ মিলিলিটারের দাম ৫ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪২৫ টাকা। অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া দ্বীপে পাওয়া যায় এই পানি। বৃষ্টির পানি মাটিতে পড়ার আগেই বোতলবন্দি করা হয়। আন্টার্কটিকা হয়ে সমুদ্রের ১৬ হাজার কিলোমিটার অতিক্রম করে বৃষ্টি যখন তাসমানিয়া পৌঁছয়, তখনই এই পানি বোতলবন্দি করা হয়। ওয়ার্ল্ড মিটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন-এর সমীক্ষায় তাসমানিয়ার বাতাস পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বিশুদ্ধ।

লকুয়েন আর্টেস মিনারেল ওয়াটার: আর্জেন্তিনার দক্ষিণ প্রান্তে সান কার্লোস বারিলপোসের কাছে গভীর অরণ্যে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫০০ মিটার নিচ থেকে এই পানি সংগ্রহ করা হয়। ৭৫০ মিলিলিটারের এক বোতল পানির কিনতে গুনতে হয় ৬ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা পড়বে ৫১০ টাকা।অ্যাকোয়া ডেকো: ডেকোর অর্থ হলো শৈল্পিক। কারুকার্যখচিত বোতলের পানি বলেই এর নাম অ্যাকোয়া ডেকো। কানাডার একটি ঝর্না থেকে এই পানি সংগ্রহ করা হয়। ৭৫০ মিলিলিটাররের এক বোতল অ্যাকোয়া ডেকোর দাম ১২ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় পড়বে এক হাজার ২০ টাকা।

টেন থাউজ্যান্ড বিসি: কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার হ্যাট মাউন্টেন হিমবাহ থেকে এই পানি সংগ্রহ করা হয়। ৭৫০ মিলিলিটারের এক বোতল পানির দাম ১৪ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা পড়বে এক হাজার ১৯০ টাকা।

ভিন: দাবি করা হয় এটা বিশ্বের সবচেয়ে শুদ্ধ পানীয়। এমনও দাবি করা হয়, অন্য পানির চেয়ে এই সংস্থার পানি দ্রুত তেষ্টা মেটায়। ফিনল্যান্ডের টেঙ্গেলিও গ্রামের কাছে ফিনিশ ল্যাপল্যান্ডে একটি ঝর্না থেকে এই পানি সংগ্রহ করা হয়। ৭৫০ মিলিলিটারের এক বোতলের দাম ৩২ ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় দুই হাজার ৭২০ টাকা।

ব্লিং এইচ২ও: আমেরিকার টেনেসির গ্রেট স্মোকি মাউন্টেনের ইংলিশ মাউন্টেন স্প্রিং থেকে এই পানি সংগ্রহ করা হয়। তার পর নয়টি ধাপে বিশুদ্ধকরণ হয় পানির। বোতলের কারুকার্য এবং পানির স্বাদের জন্য বিশ্বের অন্যতম সেরা পানীয় পানি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে এটি। ৭৫০ মিলিলিটারের এক বোতল ব্লিং এইচ২ও পানির দাম ৪০ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় পড়বে তিন হাজার ৪০০ টাকা।

কোনা নিগারি: প্রস্তুতকারক সংস্থার দাবি, এই পানি পান করলে শক্তি পাওয়া যায়, ওজন কমে, ত্বক ভালো থাকে। এমনকি তেষ্টা মেটানোতেও এর জুড়ি মেলা ভার। এমনটাই দাবি এই হাওয়াইয়ে গভীর সমুদ্র থেকে পানি সংগ্রহের পর বেশ কয়েকটি ধাপে বিশুদ্ধকরণ হয়। তৈরি হয় জাপানে।  ৭৫০ মিলিলিটারের এক বোতলের দাম ৪০২ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৪ হাজার ১৭০ টাকা।

ফিলিকো: পানির স্বাদ ও বিশুদ্ধতার জন্য তো বটেই, বোতলের কারুকার্যের জন্য বিশ্বে এর জনপ্রিয়তাও রয়েছে যথেষ্ট। জাপানের কোবেতে নুনোবিকি নামে ঝর্না থেকে এই পানি সংগ্রহ করা হয়। এই পানির বোতলের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফিলিকো ব্ল্যাক কুইন। বোতলের পানিতে সমপরিমাণ সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং ক্যালসিয়াম রয়েছে। ৭৫০ মিলিলিটারের দাম ২১৯ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১৮ হাজার ৬১৫ টাকা। বোতলে স্বরোভস্কি ক্রিস্টাল ব্যবহার করা হয়। 

অ্যাকোয়া ডি ক্রিস্টালো ট্রিবুটো আ মডিগ্লিয়ানি: বিশ্বের সবচেয়ে দামি পানীয় এটি। কেন এত দাম? কারণ, বোতলগুলো সোনার। শুধু তাই নয়, পানির মধ্যে স্বর্ণভস্ম মেশানো থাকে। ফিজি ও ফ্রান্সের ঝর্না থেকে পানি সংগ্রহ করা হয়। এক বোতল ৭৫০ মিলিলিটারের অ্যাকোয়া ডি ক্রিস্টালো ট্রিবুটো আ মডিগ্লিয়ানি কিনতে গুনতে হবে ৬০ হাজার ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫১ লাখ টাকা।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়