কবিতা: কবিতার শব্দে আমার তুমি
এ্যানি আক্তার
প্রতীকী ছবি
জানো, আজকাল আমি আর কবিতা লিখতে পারিনা
কবিতা লিখতে গিয়ে আমি লিখে ফেলি তোমাকে,
কবিতার শরীরে জড়াতে পারিনা শব্দের চাদর
অথচ তুমি কাছে এলেই আমি জড়ো করি হাজারো না বলা শব্দের বহর।
কী অদ্ভুত তাই না?
শ্রাবনের অঢল ধারায় এখন আমি ঢেউ তুলতে পারিনা,
শুনতে পারিনা কবিতার মাদল,
অথচ কাঁপা কাঁপা হাতে অবলীলায় আমি এঁকে যাই আমাদের গোপন প্রণয়ের আদল।
কবিতা লিখা বুঝি এতোটাই কঠিন?
কবিতা মানেই বেশামাল ছন্দদের পশরা সাজানো ভীষণ কঠিন, দুর্বোধ্য,
অথচ তোমার সমুদ্রসম গভীর চোখে তাকিয়ে আমি লিখে যাই জন্মান্তরের মহাকাব্য ;
জানো, আমি যতটা তোমার হতে পেরেছি ততটা পারিনি হতে কবিতার।
এক অনুর্বর কলমে শত চেষ্টা করেও জন্ম দিতে পারিনি কবিতার ভ্রুন,
অথচ দীর্ঘ অপেক্ষার পর জন্ম দিয়েছি আমাদের নিষ্পাপ ভালোবাসার অঙ্কুর।
সত্যি কী ভীষণ অদ্ভুত তাইনা?
আমি তোমাকে ছুঁতে পারলেও পারিনি কবিতার শরীর ছুঁতে,
তীব্র বেদনা আর বিষন্নতায় দিকভ্রান্ত হয়ে আশ্রয় পাইনি কবিতার ঘরে ;
অথচ অভিমানে রক্তাক্ত হৃদয়ে, ক্লান্ত দেহে ঠাঁই নিয়েছি তোমার দুয়ারে।
আচ্ছা, কবিতা বুঝি এতোটাই কঠিন?
কবিতা আমাকে ভাঙতে পারেনি
আমিও পারিনি কবিতাকে আঁকড়ে ধরতে,
অথচ তোমার স্পর্শে আমি রোজ রোজ ভেঙেছি
মেতেছি অসম এক গল্প লিখতে।
ওগো বলোনা,
কবিতার মন কী তোমার থেকেও অসীম?
আমি কবিতা বলতে বুঝিনি শব্দের গায়ে শব্দের প্রলেপ,
ছন্দের পায়ে পায়ে হেঁটে চলা
বুঝিনি অনুভুতিদের ছাঁচে ফেলে শুরু থেকে শেষ প্রান্তে পৌঁছে যাওয়া।
আমি কবিতা লিখতে গিয়ে শুধু লিখেছি তোমাকে,
কবিতার নামকরণে আমি নিজেকে হারিয়েছি তোমাতে-আমাতে;
আমি কবিতা লিখতে গিয়ে শুধুই লিখেছি
একান্তু আমার ‘একটা তুমি’ কে।