ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কৃষিতে নতুন প্রযুক্তি ‘পলিনেট হাউস’

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:১৭, ৪ এপ্রিল ২০২৩  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষিতে যুক্ত হয়েছে নতুন প্রযুক্তি ‘পলিনেট হাউস’। অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তিতে শীত ও গ্রীষ্মকালীন উচ্চমূল্যের সব ধরনের বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন করা যাবে। পাশাপাশি উৎপাদন করা যাবে চারাও।

জেলায় দুজন কৃষি উদ্যোক্তার মাঝে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে পলিনেট হাউস বানিয়ে দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। নতুন এই প্রযুক্তি সংযোজনের ফলে জেলার কৃষিতে সম্ভাবনাময় এক যাত্রা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা। তাদের প্রত্যাশা নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে ভূমিকা রাখবে এ পদ্ধতি। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা মুঞ্জের আলম মানিক ও শিবগঞ্জ উপজেলার আরেক কৃষি উদ্যোক্তা আব্দুল মান্নান নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য পলিনেট হাউস বরাদ্দ পান। এই দুজন উদ্যোক্তা মিলে ২৫ শতাংশ করে মোট ৫০ শতাংশ জমিতে প্রথমবারের মতো পলিনেট হাউসে চাষাবাদ শুরু করেন।

পলিনেট হাউসে উন্নতমানের পলি ওয়ালপেপার ব্যবহার করায় সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগেও ফসলগুলো থাকবে অক্ষত। এ ছাড়াও প্লাস্টিক দিয়ে বানানো এই ঘরে রয়েছে ড্রিপ ও স্প্রিংকলার ইরিগেশনের (সেচ) সুবিধা। প্রয়োজনে এই প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার করে জমিতে সেচ দেওয়া যাবে। এই প্রযুক্তিতে আরও রয়েছে অত্যাধুনিক বালাই ব্যবস্থাপনার সুবিধা।

পলিনেট হাউসে পোকামাকড় আক্রমণ করতে না পারায় কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। যার ফলে এ প্রযুক্তির মাধ্যমে বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন করা সম্ভব বলে জানালেন কৃষি উদ্যোক্তা মুঞ্জের আলম মানিক। তিনি বলেন, সহজ পদ্ধতিতে পলিনেট হাউসে চাষাবাদ করা যাচ্ছে। আবহাওয়ার কারণে ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা বেড়ে গেছে, স্প্রিংকলার ছেড়ে দিলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আলাদা করে পানি বা সেচ দেওয়ার প্রয়োজন হলে ড্রিপ ছেড়ে দিলে সহজেই হয়ে যাবে।

আব্দুল মান্নান নামের অপর কৃষি উদ্যোক্তা বলেন, ‘প্রথমবারের মতো পলিনেট হাউসে স্ট্রবেরি চাষাবাদ করছি। হাউসের ভেতরে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাছগুলোতে সহজেই ফুল এসেছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিষমুক্ত নিরাপদ স্ট্রবেরির ভালো ফলন পাব বলে আশা করছি।’

রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের উপ প্রকল্প পরিচালক এসএম আমিনুজ্জামান বলেন, উচ্চমূল্যের ফসল উৎপাদন করাই পলিনেট হাউসের মূল উদ্দেশ্য। কৃষকদের আর্থিকভাবে লাভবান করতে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তাদের এ প্রযুক্তির মাধ্যমে চাষাবাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক পলাশ সরকার বলেন, নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য পলিনেট হাউস গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে বছরব্যাপী উচ্চমূল্যের ফসল সহজেই চাষাবাদ করা যায়। এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে বালাইনাশকের ব্যবহার খুব সীমিত পর্যায়ে করা হয়ে থাকে। অল্প পরিসরে পলিনেট হাউসের মাধ্যমে চাষাবাদ শুরু হলেও জেলার কৃষিতে নতুন এক প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে। এ পদ্ধতিটিকে জনপ্রিয় করতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন
সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়