ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

গাজীপুর সিটি নির্বাচন : কী শিখলো বিএনপি?

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৫১, ২৮ মে ২০২৩  

গাজীপুর সিটি নির্বাচন : কী শিখলো বিএনপি?

গাজীপুর সিটি নির্বাচন : কী শিখলো বিএনপি?

নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপির আন্দোলন চলমান। দলটির দাবি একটাই বর্তমান সরকারের পতন। সে কারণে তারা উপজেলাসহ সকল নির্বাচন বর্জন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় গাজীপুর সিটিতেও একই চিত্র দেখা গেছে। কিন্তু এতে লাভ কার, আর ক্ষতিই বা হলো কার? বিশিষ্টজনদের বক্তব্য, এ থেকে চরম শিক্ষা হওয়া উচিত বিএনপির, কারণ নির্বাচন হয়েছে অবাধ ও সুষ্ঠু।

এদিকে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারাও বলছেন তারা ফাঁদে পড়েছেন এবং এই ফাঁদ থেকে বেরোনোর পথ নেই। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিএনপির জন্য বুমেরাং হয়ে গেছে। বিএনপি মনে করেছিল, তারা নির্বাচন বর্জন করলে এই নির্বাচন হয়ে পড়বে একটা প্রহসন। জনগণের অংশগ্রহণ থাকবে না এবং অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসেবে এটি স্বীকৃতিও পাবে না।

বিএনপির কোনো কোনো নেতা এটাও মনে করেছিলেন যে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত প্রশাসন এবং সরকার প্রভাব বিস্তার করবে এবং দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করবে। তখন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতাই নির্বাচনের কারচুপির অভিযোগ আনবে। ফলে তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি বিশ্বাসযোগ্যতা পাবে। কিন্তু গাজীপুর নির্বাচনের ফলাফল হয়েছে উল্টো। এই নির্বাচনে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করেনি, প্রশাসন নিরপেক্ষ ছিল। নির্বাচন কমিশন শক্ত হাতে নির্বাচন পরিচালনা করেছে। ফলে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মডেল হয়েছে গাজীপুর।

সাধারণ ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছে। ভোট পড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। এই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে বিএনপি ছাড়াও অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব এবং সেই নির্বাচনে জনগণের মতামতের প্রতিফলনও ঘটতে পারে। আর তাই বিএনপির জন্য চাপ বেড়ে গেল।

বিএনপির এক সিনিয়র নেতা স্বীকার করেছেন যে ক্ষমতায় যাওয়ার একমাত্র রাস্তা নির্বাচন। সংগঠন গড়ে তোলার একমাত্র পথ নির্বাচন। কাজেই আমরা নির্বাচনকে দূরে রেখে সংগঠন কিভাবে গুছাতে পারি সেটি এখন প্রশ্ন। বিএনপি তাদের দ্বিতীয় ভুল কৌশল করেছে বিদেশ নির্ভরতার কারণে। তারা মনে করেছিল যে পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে নির্বাচনে জিতিয়ে দেবে। আর এই কারণেই তারা বারবার মার্কিন দূতাবাসে ধরনা দিয়েছে। কিন্তু সর্বশেষ মার্কিন ভিসা নীতি এবং নির্বাচন নিয়ে মার্কিন অবস্থান সুস্পষ্ট করেছে যে তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে সমর্থন করে না। এমনকি কোন দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলো না করলো সেটি নিয়েও তাদের মাথাব্যাথা নেই বলে তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে। তারা দেখতে চায় একটি উৎসবমুখর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, গাজীপুরের নির্বাচনে যদি বিএনপির প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করত এবং আজমত উল্লা যদি সেখানে প্রার্থী হতেন তাহলে শেষ পর্যন্ত হয়তো বিএনপি প্রার্থীর একটি নাটকীয় উত্থান ঘটতে পারত। এটি বিএনপির রাজনীতির জন্য লাভজনক হত, নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হত, দল সংঘটিত হত। কিন্তু বিএনপির ভুল কৌশলের কারণে গাজীপুরের নিয়ন্ত্রণ আওয়ামী লীগের হাতে থাকল। বিএনপি এখন সংকুচিত হতে হতে প্রায় নি:শেষ হয়ে গেল। গাজীপুর না, পুরো দেশের অবস্থাও একই রকম হয়েছে।

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়