ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

গৌরবের ইতিহাস জানাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসুর এই গ্রাফিতি

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:২৬, ২২ নভেম্বর ২০২২  

গৌরবের ইতিহাস জানাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসুর এই গ্রাফিতি

গৌরবের ইতিহাস জানাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসুর এই গ্রাফিতি

বঙ্গবন্ধুর হাতের উঁচু আঙুল যেন ৭ মার্চের ভাষণের বাস্তব প্রতিচ্ছবি। মাতৃভাষা রক্ষায় তারুণ্যের সংগ্রাম আর মুক্তিযুদ্ধে দেশমাতৃকার জন্য জীবন দানের দৃশ্যগুলো স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাসের। বলছিলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চাকসু ভবনের প্রবেশমুখে আঁকা গ্রাফিতির কথা। 

দেশের গৌরবময় ইতিহাস প্রজন্মান্তর পৌঁছে দিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চাকসু কেন্দ্রের এমন উদ্যোগ। চাকসু ভবনে প্রবেশের মুখে ডান পাশে চোখ পড়লেই দেখা মিলবে সেই ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষরের দৃশ্য। 

দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি পায় কাঙ্ক্ষিত মুক্তিযুদ্ধে বহুপ্রত্যাশিত বিজয়। এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে পূর্ববঙ্গের আপামর জনতা পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম দেয় বাংলাদেশ নামে নতুন একটি রাষ্ট্রের। হাজারো মানুষের ‘জয় বাংলা’ ধ্বনিতে ঢাকায় আবেগপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পরাজিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজি মুক্তি বাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে গড়া যৌথ বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে অস্ত্র ও সেনা সমর্পণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করেন। মুক্তি বাহিনীর প্রতিনিধিত্ব করেন বাংলাদেশ বাহিনীর উপপ্রধান গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার।

পাশেই দেখা যাবে, মুক্তিযুদ্ধে দেশের জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, দেশের সেসব সূর্য সন্তানদের। কেমন ছিল তাদের সংগ্রাম। কিভাবে প্রতিহত করেছেন শত্রুদের। তাদের আত্মত্যাগের ইতিহাসের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে ভূমিকা পালন করবে গ্রাফিতি। 

বাম পাশে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের বাস্তব প্রতিচ্ছবির সঙ্গে রয়েছে ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক মুহূর্তের চিত্রও। ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ সেসব ইতিহাস এবং ত্যাগের কথা তারুণ্যের আগামীর পথচলায় অনুপ্রেরণা যোগাতে ভূমিকা পালন করবে।

গতকাল সোমবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১১টায় আঁকা গ্রাফিতির উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপ উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে, চাকসু কেন্দ্রের পরিচালক ও সিনেট সদস্য শাহেদ বিন ছাদিক। এছাড়াও ছিলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান এবং সহকারী প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম। 

চাকসু কেন্দ্রের বরিষ্ঠ সহকারী পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অরূপ বড়ুয়া বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর প্রিয় চাকসু কেন্দ্র। যেখানে প্রতিদিন হাজারো শিক্ষার্থীর আনাগোনায় মুখরিত হয়। সেই চাকসু কেন্দ্রের প্রবেশমুখের দুইপাশে আমরা গ্রাফিতি আঁকার উদ্যোগ গ্রহণ করি। যেখানে দেশের গৌরবময় ইতিহাস ঐতিহ্যের প্রতি খেয়াল রেখেই করা হয়েছে। আশাকরি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করবে। 

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্য গৌরবের। অনুপ্রেরণা পাই এই ভেবে যে, আমাদের সোনালী ইতিহাস হেরে যাবার নই। আমরা চাইলেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। সে দেশকে যেভাবেই হোক আমাদের সবাইকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। চাকসু ভবনের প্রবেশ মুখে আঁকা গ্রাফিতিগুলো বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরবে বাঙ্গালীর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা।

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়