ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

ভারতের কাছে ৫ টি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:৩৬, ২৮ মার্চ ২০২৪  

ভারতের কাছে ৫ টি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ

ভারতের কাছে ৫ টি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ

বাজার মূল্যের ওঠানামা এবং ঘাটতি মোকাবিলায় ভারত থেকে চাল ও গমসহ পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত বার্ষিক সরবরাহ চেয়েছে বাংলাদেশ, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এ কথা জানিয়েছেন। গতকাল বুধবার (২৭ মার্চ) হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।দুই দেশ এই বিষয়ে আলোচনা করেছে। নয়াদিল্লিকে পেঁয়াজ, আদা এবং রসুনসহ এই পণ্যগুলির জন্য নির্দিষ্ট কোটার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে বলেছে ঢাকা। 

দেশীয় চাহিদা মেটাতে ভারত ২০২২ সালের মে মাসে গম রফতানি এবং ২০২৩ সালের জুলাইয়ে অ-বাসমতি চাল রফতানি নিষিদ্ধ করেছিল। গত ডিসেম্বরে প্রায় চার মাস পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ করে ভারত সরকার। তবে কেস টু কেস ভিত্তিতে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কার মতো প্রতিবেশি দেশগুলোতে চাল, গম এবং পেঁয়াজ সরবরাহ করেছে। একইভাবে মূল অংশীদার যেমন সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ইন্দোনেশিয়া এবং ভিয়েতনামেও পন্যগুলো বিক্রি করেছে।

রমজানের আগে, সরকার কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে অনুরোধের প্রতিক্রিয়ায় মার্চের শুরুতে বাংলাদেশে ৫০,০০০ টন পেঁয়াজ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে আরও ১৪,৪০০ টন পেঁয়াজ রফতানির অনুমতি দেয়। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর এটিই ছিল প্রথম রফতানি।

“যদিও ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ এক্সপোর্টস লিমিটেডের মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত সমস্ত সরবরাহ বাংলাদেশে পৌঁছায়নি। ভারত সরকারের এমন সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের বাজারে অবিলম্বে দাম কমে যায়। যা গত বছর থেকে ব্যাপকভাবে বেড়েছে”, উপরে উদ্ধৃত এক ব্যক্তি বলেন। 

"এই পাঁচটি পণ্যের জন্য নির্দিষ্ট কোটা রাখার পদক্ষেপের লক্ষ্য রফতানি নিষেধাজ্ঞা থেকে কিছুটা সুরক্ষা এবং প্রতি বছর নিরবচ্ছিন্ন এবং নিশ্চিত সরবরাহ নিশ্চিত করা," ঐ ব্যক্তি যোগ করেন।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধের বিষয়ে ভারতীয় পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক সারা পাওয়া যায়নি। জানুয়ারিতে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে বৈঠকে দেখা হয়েছিল। এ সময় হাসান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর বিষয়ে শেখ হাসিনা সরকারের মনোযোগের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তিনি চিনি ও পেঁয়াজের অতিরিক্ত সরবরাহ চেয়েছিলেন।

ভারতের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশটি থেকে বাংলাদেশের চাল আমদানি ২০২১-২২ সালে ৯.৭ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২২-২৩ সালে ১১.১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। যেখানে গম আমদানি ২০২১-২২ সালে ২.১ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২২-২৩ সালে ১.৫ বিলিয়ন ডলারের সমমূল্যের বলে জানিয়েছে।

ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি ২০২১-২২ সালে ৪৬০.৫ মিলিয়ন ডলার থেকে ২০২১-২৩ সালে ৫৬১.৮ মিলিয়ন ডলারে উন্নতি হয়েছে। যেখানে আদার আমদানি ২০২১-২২ সালে ৯৩ মিলিয়ন ডলার থেকে ২০২১-২৩ সালে ৩৫.৯ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। রসুনের আমদানি ২০২১-২২ সালে ২.৯ মিলিয়ন ডলার থেকে ২০২১-২৩ সালে বেড়ে ১১.৩ মিলিয়ন ডলার হয়েছে।

২০১৯ সালে, অভ্যন্তরীণ মূল্যবৃদ্ধির কারণে ভারতের পেঁয়াজ রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের উপর একটি বড় প্রভাব ফেলেছিল। সেই সময়ে ভারত সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মজা করে নয়াদিল্লিতে একটি বিজনেস ফোরামে গয়ালের উপস্থিতিতে বলেছিলেন যে তিনি তার বাবুর্চিকে পেঁয়াজ ব্যবহার বন্ধ করতে বলেছিলেন। তিনি আরো বলেন, ভারতের উচিত বাংলাদেশকে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে আগেই সতর্ক করা।

প্রতিবেশীদের মধ্যে ভারতের সবচেয়ে বিশ্বস্ত অংশীদারদের মধ্যে একটি বাংলাদেশ। উভয় পক্ষই বাণিজ্য, জ্বালানি সরবরাহ এবং পর্যটনের জন্য সংযোগ বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করেছে। জানুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিজয়ও ক্রমবর্ধমান সম্পর্ককে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়