ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ঘুরে আসুন ‘দেশের সবচেয়ে বড় ও সুন্দর জমিদার বাড়ি’ থেকে

ভ্রমণ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৪০, ৩ মে ২০২৩  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ঈদ এবং ঈদের ছুটি শেষ। এবার সাপ্তাহি বা অন্যান্য ছুটির দিনে যারা ঢাকার আশপাশেই ঘুরে বেড়াতে চান, তাদের জন্য সেরা এক স্থান হতে পারে মহেরা জমিদার বাড়ি।

বলা হয়, মহেরা জমিদার বাড়িই নাকি দেশের সবচেয়ে বড় ও সুন্দর জমিদার বাড়ি। যার বয়স জানলে আপনি রীতিমতো চমকে উঠবেন, ১৩৩ বছরের পুরোনো এই জমিদার বাড়িটির ইতিহাস।

ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের নাটিয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই জমিদার বাড়ি। টাঙ্গাইলে অবস্থিত বিভিন্ন জমিদার বাড়ির মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হলো মহেরা জমিদার বাড়ি।

আজও চকচক করছে এ বাড়ির দেওয়াল। তখনকার কারিগরদের হাতের ছোঁয়া কি অপূর্ব ছিল; তা এই জমিদার বাড়ির সৌন্দর্য ও নজরকাড়া কারুকার্য দেখলেই অনুমান করা যায়। ১৮৯০ সালেরও আগে নির্মিত হয় এই জমিদার বাড়ি।

জানা যায়, স্পেনের করডোভা নগরের আদলে নির্মিত এই জমিদার বাড়ি। কালীচরণ সাহা ও আনন্দ সাহা নামে দুই ভাই ১ হাজার ১৭৪ শতাংশ জমির উপর এই বাড়ি নির্মাণ করেন।

জমিদার বাড়ির সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও সুন্দর ভবনের নাম কালীচরণ লজ। ইংরেজি ইউ অক্ষরের আদলে করা ভবনটি রানিদের জন্য নির্মাণ করা হয়। তাই একে রানি ভবনও বলা হত এককালে।

জমিদার বাড়ির ভেতরে বাগান, শিশুপার্ক, বিভিন্ন আর্টিফিশিয়াল স্থাপনা আছে। এছাড়া পাখ-পাখালি, বাগান, পুকুর, বিল্ডিং সব মিলিয়ে স্বপ্নপুরীর মতো মনে হয় মহেরা জমিদার বাড়ি।

রাজকীয় এই বাড়িতে প্রবেশের আগেই চোখে পরে বিশাল এক দীঘির। যার নাম বিশাখা সাগর। এই জমিদার বাড়ির উল্টো দিকে আছে পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একাডেমিক ভবন।

মূল ফটকের পরেই দেখা যায় চৌধুরী লজের। পাশাপাশি আছে আরো দুটি লজ। এর পাশেই আছে আকর্ষণীয় এক ভবন। যার নাম আনন্দ লজ। তার পাশে আছে মহারাজ লজ। ভবনগুলো দেখতে প্রায় একই রকম।

দৃষ্টিনন্দন লজগুলো দেখা শেষ হতেই পাসরা ও রানি পুকুর পারে খানিকটা বিশ্রাম নিতে পারেন। পুকুরের পাশেই আছে রঙিন মাছে ভরা অ্যাকুরিয়াম। আরো আছে লোহার তৈরি টেবিল ও চেয়ার। এবার ঘুরে দেখুন জাদুঘর।

ইতিহাস অনুযায়ী, স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকবাহিনী মহেড়া জমিদার বাড়িতে হামলা করে। জমিদার বাড়ির কূলবধূসহ পাঁচ গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরবর্তী সময়ে তারা লৌহজং নদীর নৌপথে এ দেশ ত্যাগ করেন। এখানেই তখন মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছিল।

এ জমিদার বাড়ি পুলিশ ট্রেনিং স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় ১৯৭২ সালে। পুলিশ ট্রেনিং স্কুলকে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে উন্নীত করা হয় ১৯৯০ সালে।

যেভাবে যাবেন

ঢাকার মহাখালী থেকে টাঙ্গাইলে চলাচলকারী বিভিন্ন বাসে চড়ে আপনাকে প্রথমে যেতে হবে নাটিয়াপাড়ায়। সেখান থেকে সিএনজি, অটোরিকশা, টেম্পো অথবা রিকশায় করে মহেরাপাড়া পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পৌঁছাতে হবে।

এছাড়া আপনি ব্যাক্তিগত গাড়িতে করেও যেতে পারেন। ২০ টাকার টিকিট কেটেই আপনি পুরো জমিদারবাড়ি ঘুরতে পারবেন। দেখতে পারবেন দিনভর।

তো! এবার দিনক্ষণ ঠিক করে প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে ঘুরে আসুন দেশের সবচেয়ে বড় ও সুন্দর জমিদার বাড়ি থেকে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়