ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

তিস্তার চরে চাষাবাদের ধুম

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৩৫, ১৮ অক্টোবর ২০২৩  

তিস্তার চরে চাষাবাদের ধুম

তিস্তার চরে চাষাবাদের ধুম

তিস্তা নদীতে পানি কমেছে। বন্যা শেষ না হতেই তিস্তার বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর। আর সেই চরে চাষাবাদ শুরু করেছেন চাষিরা। তবে উজানের পানি প্রবাহে বাংলাদেশ অংশে তিস্তার পানি এখন সাড়ে ২৩ হাজার কিউসেক বলে মনে করছেন তিস্তাপাড়ের প্রবীণ মাঝি সোলেমান আলী (৬৫)। এখনো তিনি নৌকা বয়ে তিস্তায় ঘুরেন। সরেজমিন দেখা যায়, নদীর পানি কমে যাওয়ায় তিস্তার চরে ফসল আবাদের ধুম পড়েছে।

বিশেষ করে আলু, মিষ্টিকুমড়া, পিঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন ফসল চাষ শুরু করেছে চরবাসী। তিস্তাপাড়ের পরিবারগুলো দল বেঁধে ফসল আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিগত বছরগুলোয় তারা তিস্তার চরগুলোকে ফুডবাস্কেটে পরিণত করেছিল, এবারও তারা সে পথেই হাঁটছেন। চরাঞ্চলের পলি ও দোআঁশ মাটিতে চরবাসী আলু, গম, ভুট্টা, সরিষা, মুগ ডাল, মশুর ডাল, মাষকলাই, খেসারি, পিঁয়াজ, রসুন, মরিচ, চিনাবাদাম, মিষ্টিকুমড়া, স্কোয়াশসহ নানা জাতের ফসলের চাষাবাদ শুরু করেছেন। একসময়ের পশুচারণ ভূমি এই তিস্তাপাড়ে এখন ১২ মাস ফলে নানারকম ফসল। বদলে গেছে চরবাসীর পেশাও। আগে যারা মাছ ধরত এখন তারা ফসল চাষি। কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, গত কয়েক বছরের ব্যবধানে তিস্তার চরে কৃষি বিপ্লব ঘটেছে। এখন ৩৪ প্রকার ফসলের আবাদ হয়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে এসব ফসল। এই চরাঞ্চলের অনেক জমিতে এখন বছরে তিনটি ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে চরাঞ্চলের মানুষজন এখন দিন দিন স্বাবলম্বী হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারি, সদর রংপুরের গঙ্গাচরাসহ বিভিন্ন চরের প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফসলের চাষ হয়ে আসছে। অক্লান্ত পরিশ্রম করে বালি মাটিতে সমৃদ্ধশালী ফসলের সমাহার ঘটিয়েছেন তারা। একসময় তিস্তার চরাঞ্চলের মানুষ দরিদ্র্যতার সঙ্গে যুদ্ধ করত। এই অঞ্চলকে বলা হতো মঙ্গাপীড়িত এলাকা। চরে চাষাবাদ শুরু হওয়ায় পাল্টে গেছে এখানকার জীবনযাত্রা। কালীগঞ্জের চর বৈরাতির বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, নদীতে বেশি পানি থাকলে চরে আবাদ করা সমস্যা হয়। পানি কম থাকলে ফসল আবাদ ভালােই হয়। গত বছর দুই একর জমিতে মিষ্টিকুমড়া আর এক একর জমিতে স্কোয়াশ আবাদ করে ভালো লাভ পেয়েছি। এবারও অনেকে মিষ্টিকুমড়ার চাষ করছে। গাছ লাগানো হচ্ছে। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, বন্যার পানির সঙ্গে যে পলি আসে চরে, তা ফসল আবাদের জন্য খুবই উপকারি। এতে চরের কৃষকরা তিস্তার চরে ফসল আবাদ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে চরের কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। বিশেষ প্রণোদনার মাধ্যমে চরবাসীকে সহায়তা করা হচ্ছে।

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়