ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বে-টার্মিনালে বিনিয়োগ হবে দশ বিলিয়ন ডলার

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৩৬, ২৫ এপ্রিল ২০২৪  

বে-টার্মিনালে বিনিয়োগ হবে দশ বিলিয়ন ডলার

বে-টার্মিনালে বিনিয়োগ হবে দশ বিলিয়ন ডলার

চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনালে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল। চট্টগ্রাম বন্দরের অগ্রাধিকার প্রকল্প মাল্টিপারপাস টার্মিনালের নির্মাণ কাজ চলতি বছরের মধ্যে শুরুর পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বন্দরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে টার্মিনাল নির্মাণে আবুধাবি পোর্ট গ্রুপ (এডি পোর্টস) এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব করেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সি অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বন্দর চেয়ারম্যান। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ১৩৭তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বন্দর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহায়েল জানান, বে-টার্মিনালে তিনটি টার্মিনাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত থাকলেও এখন চারটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। দুটি কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের দায়িত্ব বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হবে। দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে চতুর্থ টার্মিনাল হিসেবে তরল গ্যাস ও অয়েল টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বে-টার্মিনালের দুটি কনটেইনার টার্মিনাল ১ ও ২ পরিচালনায় যথাক্রমে পিএসএ সিঙ্গাপুর ও ডিপি ওয়ার্ল্ড দেড় বিলিয়ন করে তিন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হবে। এছাড়া বে-টার্মিনালের চ্যানেল নির্মাণে বিনিয়োগ হবে অর্ধ বিলিয়ন ডলার। বে-টার্মিনালেই সর্বোচ্চ বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে দাবি করে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, এটাই সর্বোচ্চ বিদেশি বিনিয়োগ। বে-টার্মিনালের ভূমি পেয়ে গেছি, মাস্টার প্ল্যান তৈরি হয়েছে। এখন ডিটেইল ডিজাইনের কাজ চলছে। চ্যানেল ডিজাইন চূড়ান্ত হয়েছে।

বিগত এক বছরকে চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, গত এক বছরে চট্টগ্রাম বন্দরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বন্দরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে তারা জনবল নিয়োগ ও কিছু যন্ত্রপাতি এনেছে। বাকি যন্ত্রপাতিও চলে আসবে। ফলে অন্যান্য টার্মিনাল অপারেটরদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে।

চট্টগ্রাম বন্দর ল্যান্ড লর্ড সিস্টেমে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, বিশ্বের অধিকাংশ বন্দর এই পদ্ধতিতে চলে। আমরাও এখন আধুনিক বন্দরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পুরনো খোলস থেকে বেরিয়ে আসছি। ফলে বিদেশিদের ব্যাপক বিনিয়োগ আগ্রহ তৈরি হয়েছে। বন্দরের ছয়টি বড় প্রকল্পের কাজ চলছে। কক্সবাজার গভীর সমুদ্র বন্দর চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। যন্ত্রপাতি কেনার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছি। পণ্য পরিবহনে সংযোগ সড়ক নির্মাণে কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এছাড়া কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন হয়েছে। রেললাইনের পাশেই একটি ডিপো নির্মাণ করা হবে। সেখান থেকে রেলে পণ্য পরিবহন করা যাবে। বে-টার্মিনাল ও মাতারবাড়ী বন্দর চালু হলে লজিস্টিক কস্ট ৫০ শতাংশ কমে যাবে। মাতারবাড়ী বন্দরের জন্য দ্বিতীয় ধাপে জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। আগামী ৬ থেকে ৭ মাসের মধ্যে অধিগ্রহণের কাজ শুরু হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বন্দরের ট্যারিফ পরিবর্তনের কাজ চলছে। ১৯৮৬ সাল থেকে নির্ধারিত ট্যারিফ বন্দর আদায় করছে। এখন জ্বালানির দাম বেড়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় আমাদের ট্যারিফ কম। নতুন ট্যারিফের প্রস্তাবনা তৈরি হয়েছে।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, পিসিটিতে প্রতি বছরে পাঁচ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং ভাড়া দিতে হবে কার্যাদেশ পাওয়া বিদেশি অপারেটরকে, কনটেইনার হ্যান্ডলিং হোক বা না হোক। সবার কাছে হিসাব আছে বাংলাদেশের চাহিদা সম্পর্কে।

এমভি আবদুল্লাহ নিরাপদে মুক্ত হওয়ায় দেশের ভাবমূর্তি বেড়েছে মন্তব্য করে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি নিরাপদে মুক্ত হওয়ায় দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের আন্তরিকতা, বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতায় এটা সম্ভব হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম বন্দরের পর্ষদ সদস্য (প্রকৌশল) ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান, সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) হাবিবুর রহমান, সদস্য (অর্থ) শহীদুল আলম ও সচিব মো. ওমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়