ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারেজ: এ যেন সমুদ্রের তীরের সৈকতের ছোঁয়া

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৪৮, ২৩ এপ্রিল ২০২৩  

দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারেজ: এ যেন সমুদ্রের তীরের  সৈকতের ছোঁয়া

দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারেজ: এ যেন সমুদ্রের তীরের সৈকতের ছোঁয়া


দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারেজ এবং তিস্তার নদী ঘিরে দর্শনার্থীর পদচারণা এবারও ঈদ উপলক্ষে এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। এ যেন সমুদ্রের তীরের  সৈকতের ছোঁয়া। রিতিমত সেখানে গ্রামীন মেলা বসেছে। 

ঈদ আনন্দে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে নীলফামারীর ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ এলাকা। তিস্তা ব্যারাজের দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দর্শনার্থীদের ঢল । ঈদের দিনে দুপুরে পর তিস্তা ব্যারাজে বিনোদন পিপাসু মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্যণীয়। ঈদের ছুটির তিনদিন চলবে আনন্দ উৎসব। 

দুই সপ্তাহ ধরে প্রচন্ড তাপদাহের পর স্বস্তি খুঁজতে শনিবার (২২ এপ্রিল) ঈদের প্রথম দিন  দর্শনার্থীরা দূর-দূরান্ত থেকে আসে তিস্তা ব্যারাজ। ব্যারাজ এলাকায় জমে উঠেছে বিভিন্ন দোকান পাট। সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদ উপলক্ষে তিস্তার বুকে স্পিডবোট ও লালনীল কাপড়ের ছাউনি লাগানো বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা চলছে। দ্রুত বেগে এপাশ থেকে ওপাশে ছুটে চলছেন পর্যটকরা। 

মাত্র ৫০ টাকায় নদীর ভ্রমনে ভাসছেন দর্শনার্থীরা। হৈ হুল্লোড়ে মেতে উঠছেন সবাই। বড় বড় ঢেউ এসে ধাক্কা দিচ্ছে তিস্তা কূলে। ছিটকে আসা জলরাশির আনন্দে মেতে উঠছে সবাই।ঈদের উৎসবে রঙিন হয়ে উঠেছে ছোট-বড় সব বয়সী মানুষের মন। আনন্দের মাত্রা বাড়াতে ক্যামেরা ও মোবাইলে ছবি তুলে স্মৃতির ফ্রেমে বন্দি করছেন প্রিয় মুহূর্তগুলো। 
জেলা ও উপজেলা শহর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিনোদনপ্রেমীরা ছুটে আসছে। 

সেখানে বসেছে  গ্রামীন মেলার হাট। নানা রকম পণ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে দোকানগুলো। বিভিন্ন খেলনা, বাঁশি, বেলুন, মাটির গাড়ি ও খাবারের দোকান। নদীর বুকে ভাসমান বিলুপ্ত বেশ কিছু পাল তোলা নৌকা নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের। দর্শনার্থীরা জানায়, গত কয়েকদিনের দাহদাহে প্রাণ ছিল ওষ্ঠাগত। তাই ঈদ উপলক্ষে গ্রামে পরিবার পরিজন নিয়ে প্রকৃতির হাওয়া পেতেতিস্তা ব্যারাজে ঘুরতে এসেছে।

আজিমুদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী রণিকা বেগম তাঁদের বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের তুষভান্ডার ইউনিয়নের চর কাঞ্চন স্বর এলাকায়। আজিমুদ্দিন বলেন, ঈদ আনন্দে ঘুরতে এসেছি।

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা থেকে আসা সুজন ইসলাম ও রনি ইসলাম জানান, তিস্তা ব্যারাজের নাম প্রতিবছর বন্যার সময় পত্রিকায় পড়েন, টিভিতে দেখেন। এবার ঈদের ছুটিতে সরাসরি দেখতে তাঁরা ছুটে এসেছেন। এখানে এসে বেশ ভালো লেগেছে তাঁদের। আগামী বছর এখানে আবার আসার ইচ্ছা আছে।

ঝালমুড়ি-চানাচুর ও আচার বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, ঈদের তিন দিন চলবে এই দর্শনার্থীদের ভীড়। আসা করি এই তিনদিনে  ১০ হাজার টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে তিন থেকে চার হাজার টাকা লাভ হবে। বাহারি খেলনা বিক্রি করে ভালো ব্যবসা হচ্ছে বলেও জানালেন খেলনা বিক্রেতা সুভাষ চন্দ্র রায়।

তিস্তা নদীর ধারে একেবারে গ্রাম্য পরিবেশে হলেও নিরাপত্তা নিয়ে তেমন কোনো ঝুঁক্কি পোহাতে হচ্ছেনা দর্শনার্থীদের। ছোট ছোট দোকানে সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায় নাস্তা-খাবারও। ব্যারেজের বিশেষ অবকাঠামো, অবসর (রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন), কন্ট্রোল রুমম, ব্লক আর পাথরে পিচিং করা নদী পাড়, ফুল আর বনোজ গাছের বাগানগুলো ঘুরতে আসা মানুষগুলোর যেন সহজেই মন কাড়ে। 

মন চাইলে পাল তোলা নৌকাতেও দল বেঁধে ভ্রমণ করার সুযোগ মেলে তাদের। দোয়ানী পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত এসআই সিদ্দিক বলেন, ঈদ উপলক্ষে অন্য বছরের তুলনায় ব্যারাজ এলাকায় এবার প্রচুর মানুষের সমাগাম ঘটেছে। পুলিশ  ও আনসার সদস্যরা দর্শনার্থীদের নিরপক্তায় নিয়োজিত রয়েছে। 

সর্বশেষ
জনপ্রিয়