ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ভ্রমণের নতুন জায়গা ‘কাগজিখোলা নীলাদ্রী লেক’

এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন

প্রকাশিত: ১২:৩৫, ২২ মে ২০২৩  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

পাহাড়ের মাঝে বয়ে চলা  আঁকাবাঁকা মেঠোপথ ধরে অপরূপ  নৈসর্গিক লীলাভূমি ‘কাগজিখোলা নীলাদ্রী লেক’। উঁচু-নিচু পাহাড়ের চূড়ায় সবুজের সমারোহ ও সুদীর্ঘ জলরাশির মিলনমেলা যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে ভ্রমণপিপাসুদের। 

কক্সবাজার ও পার্বত্য বান্দরবান সীমান্তবর্তী ঈদগড় ইউনিয়নের সীমানায় এ পর্যটনকেন্দ্রের অবস্থান। এর নৈসর্গিক দৃশ্য দেখে যে কারো চোখ জুড়িয়ে যাবে। উঁচু-নিচু পাহাড়ে যেন সবুজের গালিচা বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ লেক ভ্রমণপিপাসুদের মুগ্ধ করছে। পাহাড় আর কার্পেটিং করা কালো রঙের সড়কের মিতালি যেন এক রোমাঞ্চকর ভ্রমণের সেতুবন্ধন তৈরি করে দিয়েছে। 

এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় দূরদূরান্তের পর্যটকদের কাছে এখনও তেমন পরিচিত হয়ে উঠেনি। যদিও প্রতিদিন কক্সবাজার জেলা এবং দূরদূরান্তের পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াচ্ছে কাগজিখোলা নিলাদ্রী লেক। 

যদিও সরকারিভাবে এখনও পৃষ্ঠপোষকতা ও রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় তেমনভাবে ফুটে ওঠেনি। গত বছর ১৪ ডিসেম্বর বেসারিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন কাগজিখোলা নীলাদ্রী লেকের উদ্বোধন করেছেন। তবে এই মুহূর্তে আগত দর্শনার্থীরা বলছেন, লেকে এখনও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়নি। বিশেষভাবে নারী দর্শনার্থীদের শৌচাগারের জন্য পড়তে হবে বিপাকে। 

ভ্রমণপিপাসুরা মনে করছেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নৈসর্গিক এই লেক ও মনোরম পাহাড় হয়ে উঠতে পারে আকর্ষণী পর্যটন স্পট। কক্সবাজারের সদ্য ঘোষিত ঈদগাঁও উপজেলা বাস স্টেশন হয়ে ১০ কিমি পূর্বে রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়ন। ঈদগড় বাজার থেকে ৭ কিমি উত্তরে বাইশারী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডেই অবস্থিত কাগজিখোলা গ্রাম। সেই গ্রামের আছে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হওয়া দীর্ঘ জলরাশির এই লেক। যার নামকরণ হয়েছে ‘কাগজিখোলা নিলাদ্রী লেক’। আর লেকের চার পাশে রয়েছে উঁচু-নিচু মনোরম পাহাড়। 

কক্সবাজার (৩) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, যে লেকটি এখন দৃশ্যমান।  এটি রাঙামাটির পাহাড়ি যে লেকগুলো রয়েছে তার  তুলনায় কোনো অংশে কম নয়। প্রাণ প্রকৃতির সমারোহ  এত সুন্দর যে এই লেক যা, বলার মতো না। এক পাশে পাহাড় একপাশে বাউকুল বাগানসহ অন্যান্য সুন্দর করেছে এই লেকে।  তিনি সবাইকে সেখানে ভ্রমণ করার কথা বলছেন। পাশাপাশি এই লেক কে আরো সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলতে সামগ্রিক প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন এ সাংসদ।

পার্শ্ববর্তী বাইশারী থেকে আসা চাকমা তরুণী  সামপ্রু বলেন, এই লেকটাকে ঢেলে সাজাতে হবে। গহীন পাহাড়ের নিচে হওয়াতে নিরাপত্তা নিয়েও একটু ভয় আছে। পাশাপাশি নারী পর্যটকসহ সবার ক্ষেত্রে শৌচাগার প্রয়োজন। এই মুহূর্তে নতুন উদ্ভাবন হওয়া লেকটি দেখভাল করছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন। 

তিনি জানান, এই এলাকাটিকে একটি দৃষ্টিনন্দন লেক করার স্বপ্ন আমার অনেক দিনের। এলাকাটি দুর্গম ও রাস্তাঘাট না থাকায় এতদিন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তিনি বলেন, বান্দরবানের বীর পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুরের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ঈদগড় বাজার থেকে কাগজিখোলা পুলিশ ক্যাম্প পর্যন্ত সড়কটি কার্পেটিং করে দেওয়ায় যাতায়াতের ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। তাই এখন কাগজিখোলা নিলাদ্রী লেক করার উদ্যোগ নিয়েছি।

ইদগড় ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ ভূট্রো বলেন, লেকটি এত সুন্দর,যে কারো চিত্ত আকর্ষণ করবে। আমরা এই লেকের উন্নয়নে একটি  উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছি। এটি বাস্তবায়ন করা হলে ভ্রমণপিপাসুদের আদর্শ স্পটে পরিণত হবে কাগজীখোলা নিলাদ্রী লেক। একটি রেস্ট হাউসসহ ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন করা হলে পর্যটকের সংখ্যা অনেকটা বেড়ে যাবে। এ জন্য প্রয়োজন সরকারের সু নজর ও ব্যাপক প্রচারণা।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এসে পর্যটকের আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতে উঠে। সৈকত থেকে মাত্র ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা হাতে রেখে উঁচু-নিচু পাহাড়ি সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তাদের আদর্শ স্থান হবে এই নীলাদ্রি লেক।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়