ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

শেরপুরে হলুদ সূর্যমুখীতে ছেয়ে গেছে ফসলের মাঠ

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:১৩, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

হলুদ সূর্যমুখীতে ছেয়ে গেছে শেরপুরের পূর্বশেরী এলাকার কৃষক আশরাফ আলীর ফসলের মাঠ। এ বছর তিনি ১০ কাঠা জমিতে চাষ করেছেন হলুদ সূর্যমুখীর। যার তেল বিক্রি করে লাভের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, শেরপুর জেলায় ২৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। এবার জেলায় মাত্র ৯ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।

জানা গেছে, কৃষক আশরাফ আলী দীর্ঘদিন ধরে সরিষার চাষ করে আসছেন। এ বছরের প্রথমেই তাকে সরকারিভাবে সরিষার বীজ দেয়া হয়েছিল। সরিষার পর আবার তাকে তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির প্রকল্পের আওতায় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূর্যমুখীর বীজ দেন। তিনি শুধু সেচ খরচ দিয়ে এ সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। এ সূর্যমুখী থেকে সব মিলিয়ে লাখ টাকার মতো লাভ করবেন বলে তিনি আশাবাদী। তার ফসলের মাঠে প্রত্যেকটি গাছেই ফুল এসেছে। এ গাছের অবশিষ্ট অংশ পশুর খাবার বা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

কৃষক আশরাফ আলী বলেন, ১০ কাঠা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। আমার তেমন টাকা খরচ হয়নি শুধু সেচ খরচ ছাড়া। আশা করছি এবার লাভ বেশি হবে। আমি এর আগে সরিষা লাগিয়ে ছিলাম। সরিষার বাম্পার ফলন দেখে সরকার থেকে ট্রাক্টর দিয়েছিল। এ বছর আবার কৃষি অফিস থেকে সূর্যমুখীর বীজ দিয়েছিল। ফলন ভালোই হয়েছে। তবে সূর্যমুখী তেল ভাঙার কোনো মেশিন না থাকায় সরিষার মেশিন দিয়ে ভাঙতে হচ্ছে। যার ফলে তেলের মানও খারাপ হয়। এতে সঠিক মুনাফা পান না কৃষকরা। তাই এ সূর্যমুখী চাষ করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেক কৃষক। তিনি আরও বলেন, তার ফসলের মাঠে সূর্যমুখীর হাসি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন লোকজন। অনেকে সূর্যমুখী ফুল দেখতে এসে ছবিও তুলছেন। তবে দর্শনার্থীদের মধ্যে অনেকেই এখানে এসে ফুল ছিঁড়ছেন। যার কারণে আমার প্রচুর ক্ষতি হচ্ছে।

এদিকে সূর্যমুখী ফুল দেখতে আসা শিশু রকিব বলেন, আমি আমার ভাইয়ের সাথে এসেছি। সূর্যমুখী দেখে আমার খুব ভালো লাগল। আমি ফুলের সাথে ছবিও তুলেছি। সার্জেন্ট মজিদ বলেন, আমি শুনলাম শেরপুরে নাকি সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। তাই দেখতে আসলাম। বাগানটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ এখানে আসেন। এখানে এসে জানলাম কৃষক আশরাফ আলী সরকারী বীজ পেয়ে সূর্যমুখী চাষ করেছেন। সূর্যমুখীগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। আমার দাবি কৃষি বিভাগ এ বীজ সবার মাঝে যেন বিতরণ করে। তাহলে শেরপুর তেল জাতীয় আবাদের স্থান বৃদ্ধি পাবে।

শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, শেরপুরে রেকর্ড পরিমাণের সরিষার আবাদ হয়েছিল। তাই তেল জাতীয় আবাদ বাড়াতে একটি প্রকল্পের আওতায় তিন উপজেলায় সূর্যমুখী বীজ দেয়া হয়েছে। বীজ দেওয়ার পর থেকে কৃষকদের সূর্যমুখী চাষের সার ও বীজ সরবরাহের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এ সূর্যমুখী থেকে তেল উৎপন্ন হয়। এ তেলে অন্যসব তেলের থেকে পুষ্টির মান বেশি। এবার ফলন ভাল হওয়ায় আগামীতে ব্যাপকভাবে সূর্যমুখীর চাষ হবে আশা করছি। ১ হেক্টর জমির সূর্যমুখী থেকে ৪ টন সূর্যমুখীর বীজ পাওয়া সম্ভব, এতে প্রায় ২ লাখ টাকার মতো মুনাফা পাওয়া যাবে।

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়