ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সর্ববৃহৎ এক গম্বুজের মসজিদ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:৫৮, ৩০ মার্চ ২০২৩  

সর্ববৃহৎ এক গম্বুজের মসজিদ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে

সর্ববৃহৎ এক গম্বুজের মসজিদ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে

বাতাসে ধ্বনিত হচ্ছে আজানের ডাক। মসজিদের মুয়াজ্জিন আজানের মাধ্যমে মুসল্লিদের ডাকছেন। হাইয়া আলাস সালাহ (নামাজের জন্য আসো); হাইয়া আলাল ফালাহ (কল্যাণের জন্য আসো); এভাবেই দিনে পাঁচবার আজানের মাধ্যমে ডাকা হয় মুসল্লিদের। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আশেপাশের মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজ পড়তে আসেন। 

সব মসজিদের চিত্র এমন। তবে, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) মসজিদটি আলোচিত অন্য আরেকটি কারণে। দেশের সর্ববৃহৎ এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ এটি। ক্যাম্পাসে ঢুকলেই কৃষি অনুষদের পাশে চোখে পড়ে বৃহৎ মিনারবিশিষ্ট এই মসজিদটি। মসজিদটির অসাধারণ নির্মাণশৈলী ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে এক নতুন রূপ দিয়েছে।সরজমিনে মসজিদটি ঘুরে দেখা যায়, চতুর্ভুজ আকৃতির এই মসজিদের মোট তিনটি অংশ রয়েছে। মূল ভবনটি মসজিদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ জায়গা জুড়ে অবস্থিত। মূল ভবনে ২৬টি কাতারে নামাজ পরা যায়। ভবনের বারান্দায় ১৩টি কাতার রয়েছে। মূল অংশ এবং বারান্দা মিলে প্রায় চার হাজার মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। এর স্থাপত্যশৈলীর সব থেকে আকর্ষণীয় দিক হলো মূল কাঠামোর মধ্যবর্তী উপরের বিরাটকার গম্বুজ যা মোট ১২টি পিলারের উপর অবস্থিত।

গম্বুজের উপর রয়েছে একটি অর্ধ চাঁদ। মসজিদের আঙ্গিনাকে মূল ক্যাম্পাস থেকে পৃথক করার জন্য দেয়ালে ঘেরা তিনটি করিডোর রয়েছে। যা মসজিদের বারান্দার এক পাশ থেকে শুরু হয়ে অন্য পাশে গিয়ে শেষ হয়েছে। এসব করিডোরে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন বাগানবিলাস ফুলের সমোরাহ। যা মসজিদটিতে এনে দিয়েছে এক অনন্য সৌন্দর্য। 

মসজিদের বারান্দায় প্রবেশ করার জন্য পূর্ব পাশে মোট দুইটি, উত্তর এবং দক্ষিণে দুইটিসহ মোট চারটি দরজা রয়েছে। এরপর বারান্দা থেকে মসজিদটির মূল ভবনে প্রবেশ করতে আটটি দরজা রয়েছে। এছাড়া মসজিদের পশ্চিম ও পূর্বদিকে মুসল্লিদের ওজু করার জন্য সুব্যবস্থা রয়েছে। মসজিদের পূর্বপাশে রয়েছে একটি বিস্তৃত খোলা মাঠ।

মসজিদে সাঁটা একটি ফলক থেকে জানা যায়, প্রায় তিন যুগ আগে ১৯৮৩ সালের এপ্রিল মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মুহাম্মদ আমীনুল হক। এরপর ১৯৯৫ সালের ২ জুন মসজিদটির উদ্বোধন করা হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় এই মসজিদটিতে ইমামের দায়িত্ব পালন করছেন ড. মুফতি মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে এখানে পাঁচ ওয়াক্ত মিলিয়ে এক হাজারের বেশি মুসল্লি নামাজ আদায় করেন৷ রমজানে মুসল্লির সংখ্যাটি ২-৩ গুণ ছাড়িয়ে যায়। শুধুমাত্র পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই নয়। মসজিদে ঈদের নামাজও আদায় হয়। ঈদের দিনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারসহ আশেপাশের এলাকা ও দূর দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা এখানে নামাজ আদায় করতে আসেন।’

অনন্য এ মসজিদটি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকারিয়া আলম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গম্বুজবিশিষ্ট বৃহৎ এ মসজিদটিকে নিয়ে আমরা গর্ববোধ করতে পারি। শুক্রবার এ মসজিদটি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার সঙ্গে দেখা হয়, বিষয়টি অনেক ভালো লাগে। বিশ্ববিদ্যালয় মুসলিম সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ব তৈরিতে এ মসজিদটি ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।’বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি ও হিস্টোলজি বিভাগের সহযোগী প্রফেসর ডা. মো. নাজমুল হাসান সিদ্দীকী বলেন, কেন্দ্রীয় মসজিদে ছাত্র মুসল্লির সংখ্যা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাজেই মসজিদের আয়তন বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি। মসজিদের সামনের ফাঁকা জায়গায় (পূর্ব দিকে) মসজিদ সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। এ বিষয়ে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবার সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়