ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৯ মাসে ৪৩৫৫ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:২৯, ২৫ এপ্রিল ২০২৪  

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৯ মাসে ৪৩৫৫ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৯ মাসে ৪৩৫৫ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই থেকে মার্চ) চার হাজার ৩৫৫ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে; যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ বেশি।

গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের শহীদ মো. ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ১৩৭তম চট্টগ্রাম বন্দর দিবস উপলক্ষে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। 

বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, ‌‌‘চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে কনটেইনার জাহাজ বহির্নোঙরে আসার এক থেকে দুই দিনের মধ্যে জেটিতে ভিড়ছে। ক্ষেত্র বিশেষে অন-অ্যারাইভেল জেটিতে ভিড়ছে। বন্দরে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কনটেইনার হ্যান্ডলিং ২০২২-২০২৩-এর একই সময়ের তুলনায় ৮ দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়েছে। এ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৩ দশমিক ২ মিলিয়ন টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হবে বলে আশা করা যায়।’ 

চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি অর্জনের পেছনে বন্দরের নিরবচ্ছিন্ন কর্মতৎপরতা ও দক্ষতা রয়েছে উল্লেখ করে রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ‘২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে জেনারেল কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ৯ কোটি ১৬ লাখ ৪৯ হাজার ৬৫৯ মেট্রিক টন; যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ বেশি। বর্তমান অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে তিন হাজার একটি।’  

গত এক বছরে বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৪৩ হাজার বর্গমিটার কনটেইনার ইয়ার্ড নির্মাণ করা হয়েছে জানিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‌‌‘কনটেইনার ইয়ার্ড নির্মাণের ফলে অতিরিক্ত সাত হাজার টিইইউএস কনটেইনার ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি আরও তিনটি নতুন কনটেইনার ইয়ার্ড নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে আনা রাসায়নিক পদার্থ নিরাপদে সংরক্ষণ ও ছাড়করণের লক্ষ্যে দ্বিতল বিশিষ্ট চার হাজার ২৭৫ বর্গমিটার আয়তনের একটি কেমিক্যাল শেড নির্মাণ করা হয়েছে।’ 

বন্দরে কোনও ইক্যুইপমেন্টের স্বল্পতা নেই উল্লেখ করে মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ‘গত এক বছরে বন্দর কর্তৃপক্ষের ইক্যুইপমেন্ট বহরে পাঁচটি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন, ছয়টি ৪ হাই স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার, ছয়টি ২ হাই স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার, চারটি লোডেড রিচ স্ট্যাকার, দুটি ৩০ টন মোবাইল ক্রেন, চারটি ২০ টন ফর্কলিফট ট্রাক ও চারটি ভেরিয়েবল রিচ ট্রাকসহ সর্বমোট ৩২টি ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহের ফলে বন্দরের সক্ষমতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।’

বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‌‌‘কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট থেকে বাকলিয়া চর পর্যন্ত নদীর নাব্যতা বজায় রাখার জন্য ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের আওতায় ৪৭ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং হয়েছে। ফলে লাইটার জাহাজ নিরাপদে চলাচলসহ সুশৃঙ্খলভাবে বার্থিং করা সম্ভব হচ্ছে। কর্ণফুলী নদী ও বন্দর সীমানায় নির্বিঘ্নে ব্যাথিমেট্রিক সার্ভে কাজ সম্পাদনের জন্য একটি আধুনিক প্রযুক্তির মাল্টিবিম ইকোসাউন্ডার সংগ্রহ করা হয়েছে। এর ফলে নেভিগেশনাল চ্যানেল ও বহির্নোঙর এলাকায় নির্বিঘ্নে সার্ভে কাজ সম্পাদন করা যাচ্ছে। কর্ণফুলী নদী ও বন্দর সীমানায় হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভে কাজে নির্ভুল পজিশনিংয়ের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ডিজিপিএস বেইজড স্টেশন সংগ্রহ করা হয়েছে। নিজস্ব ড্রেজার খনককে সচল করে বন্দর কর্তৃপক্ষের ড্রেজিং টিমকে কার্যকর করা হয়েছে। কর্ণফুলী নেভিগেশনাল চ্যানেল ও জেটির সম্মুখভাগে নিয়মিত সংরক্ষণ ড্রেজিং কাজ করা হচ্ছে। ফলে বাণিজ্যিক জাহাজসমূহ নিরাপদ চলাচল নিশ্চিতসহ বন্দরের জেটিতে বার্থিং করা সম্ভব হচ্ছে।’

বন্দরের রাজস্ব আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে জাহাজ সেবা এবং মালামাল হ্যান্ডলিং খাত থেকে জানিয়ে মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ‘বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে কালুরঘাট সেতু থেকে কর্ণফুলী সেতু পর্যন্ত ১৫০০ মিটার ও ৩০০ মিটার আয়তনের দুটি বাঁকে সাত মিটার গভীরতাসম্পন্ন অভ্যন্তরীণ নোঙরের স্থান করা হয়েছে। যেখানে প্রায় ৩০০ জাহাজ নোঙর করতে পারে। আগের ২২টিসহ নতুন করে ১৫টি মুরিং বয়া স্থাপন করা হয়েছে। ৩৭টি বয়ায় অভ্যন্তরীণ জাহাজ এবং ফিশিং ট্রলারের সুশৃঙ্খল চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

সর্বশেষ
জনপ্রিয়