ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৪ ১৪৩০

হামলার হুমকির পর থেকে আলোচনার কেন্দ্রে পরমাণু অস্ত্র!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:২৩, ১ অক্টোবর ২০২২  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

প্রয়োজন হলে ইউক্রেনে রাশিয়ার পারমাণবিক হামলার হুমকির পর থেকে বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরমাণু অস্ত্র। প্রতিনিয়ত নিজেদের পরমাণু অস্ত্রের আধুনিকায়ন ও মজুত বাড়াচ্ছে শক্তিধর দেশগুলো। একইসঙ্গে বাড়ছে আতঙ্ক। তবে আধুনিক পরমাণু বোমা কতদূর ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে? যদি কোনোভাবে পারমাণবিক হামলা ঘটে তবে আগামীতে কতটা ভয়ংকর হতে পারে বিশ্ব? এসব নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মানুষের মাঝে। 

পরমাণু অস্ত্রের প্রয়োগ কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তার প্রমাণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সাক্ষী হয় পুরো বিশ্ব। যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে ১৯৪৯ সালে পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। তৃতীয় দেশ হিসেবে পরমাণু বোমার পরীক্ষা করে ব্রিটেন। তবে আশির দশকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির আওতায় পরমাণু বোমার সংখ্যা কমলেও আধুনিকায়নে ব্যস্ত হয়ে পড়ে শীর্ষ ক্ষমতাধর দেশগুলো।

সামরিক শক্তিতে এগিয়ে থাকা দেশগুলোর পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। বিশ্বের মাত্র ৯টি দেশের হাতে রয়েছে প্রায় ১২ হাজার ৭০০টি পারমাণবিক অস্ত্র। দেশগুলো হলো রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান, ভারত, ইসরাইল ও উত্তর কোরিয়া। তবে ৫ হাজার ৯৭৭টি পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে সক্ষমতার তালিকায় সবার ওপরে রাশিয়া। এরপরেই অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের।

\আঞ্চলিক নিরাপত্তা রক্ষা, শক্তিমত্তা প্রদর্শন কিংবা বৈশ্বিক প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত অত্যাধুনিক অস্ত্র সরঞ্জামের মজুত বাড়াতে ব্যস্ত পরাশক্তিদেশগুলো। চলছে পরমাণু অস্ত্রেরও আধুনিকায়নও। সম্প্রতি ইউক্রনে রাশিয়ার পারমাণবিক হামলার হুমকির পর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসব বিষয়।

এবার প্রশ্ন আধুনিক পরমাণু বোমার ধ্বংসযজ্ঞের রূপ কী হতে পারে? মূলত পরমাণু অস্ত্র কতটা বিধ্বংসী হবে সেটি নির্ভর করে বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর। এর মধ্যে রয়েছে ওয়ারহেডের আকার এবং ভূমির কত ওপরে এটি বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোশিমায় ১৫ কিলোটনের ওয়ারহেডের একটি পরমাণু বোমা দেড় লাখের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটিয়েছিল।

সেই তুলনায় একবিংশ শতাব্দীতে এসে পরমাণু ওয়ারহেডগুলো আরো আধুনিক হয়েছে। যা এখন এক হাজার কিলোটনের বেশি হতে পারে। যুদ্ধক্ষেত্রে সামরিক কমান্ডারদের সুবিধায় ছোট থার্মোনিউক্লিয়ার বোমা তৈরি কিংবা ছোট ওয়ারহেড 'ট্যাকটিক্যাল নিউক্লিয়ার উইপেনের' দিকে ঝুঁকছে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, চীন। তবে আরেক সংস্করণ স্ট্র্যাটেজিক ওয়ারহেডগুলোও আয়তনে ছোট দেশগুলোকে মুহূর্তেই ধ্বংস্তূপে পরিণত করতে সক্ষম।

আরেকটি পারমাণবিক হামলার মুখোমুখি হলে বিপাকে পড়বে লাখ লাখ সাধারণ মানুষ। পুতিন সরকারের হুমকিকে সতর্কবার্তা হিসেবেই দেখলেও রাশিয়া যদি ইউক্রেনে পারমাণবিক হামলা চালায়, ন্যাটোর দাবি, তারাও গুটিয়ে বসে থাকবে না। স্বাভাবিকভাবেই পাল্টা আক্রমণ চালাতে পারে জোটের দেশগুলো। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি হবে আরও ভয়াবহ।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়