ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪ ||  চৈত্র ১৫ ১৪৩০

৫০ বছর ধরে এক টাকার জীবন যুদ্ধে লিপ্ত গাইবান্ধার মতিয়ার মিয়া!

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:২৩, ২৩ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ১৪:২৫, ২৩ জানুয়ারি ২০২৩

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নাম মতিয়ার মিয়া। বয়স ৬৫ ছুঁই ছুঁই। ষাটের দশকে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের মদনে পাড়া গ্রামে দরিদ্র কৃষক পিতা মজিবর রহমানের ঘরে জন্ম তার। স্বাধীনতার পর থেকেই চলছে এই কাশের বড়ি বিক্রি।

তাকে দেখলেই গাইবান্ধার যেকোনো বয়সী অধিকাংশ মানুষই চিনে ফেলবে, এটা কুলুর কুলুর কাশের বড়ি বিক্রেতা মতিয়ার। হাতে থাকা নানা রঙের বড় বড় গোল বড়ি (চকলেট সদৃশ) বিক্রির আগে তার 'এই কুলুর কুলুর কাশের বড়ি' এক বড়িতেই কাশ পালাবে বাড়ি' এই হকারি স্লোগানটি দেয়ার কারণেই তাকে সবাই কুলুর কুলুর কাশের বড়ি চাচা নামেই ডাকেন। কেউ কেউ তাকে কুলুর কুলুর মতিয়ার ভাই বলেও ডাকেন।

দুই ছেলের একজন ঢাকায় রিকশা চালায় অপরজন গ্রামেই রিকশা ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। একমাত্র মেয়ে মর্জিনার বিয়ে হয়েছে পাশের গ্রামে। এখনো এরশাদের দেয়া টিনের বাড়িতেই বসবাস করছেন। সত্তরের দশকে একটা কাশের বড়ি পাঁচ পয়সা বিক্রি করতেন। আজ ৫২ বছর পরেও সেই কাশের বড়ি বিক্রি করছেন মাত্র এক টাকায়। প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন অলি-গলি, হাট-বাজার ও পথে-ঘাটে হকারি করে তিন থেকে চার'শ টাকার বড়ি বিক্রি করেন। এ থেকে দুই'শ টাকার মত আয় হয়। তা দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। স্বাভাবিকভাবেই তার জীবনে অর্থনৈতিক কোন পরিবর্তন হয়নি। অথচ তার চারপাশের সবকিছুই পরিবর্তন হতে দেখেছেন তিনি।

সরেজমিনে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় মতিয়ার মিয়ার। একটি চা খাওয়ার অনুরোধ করতেই বোঝা গেল খুব সাদাসিধে ও নির্লোভ প্রকৃতির মানুষ তিনি। বললেন, 'চা খেতে রাজি আছি, তবে আজকের চায়ের বিল আমি দিব'। অল্প কথাতেই বোঝা গেল, ছোটকাল থেকে দেখে আসা সেই কুলুর কুলুর কাশের বড়ি বিক্রেতা মতিয়ার মিয়া কতটা ব্যক্তিত্বের অধিকারী।

মতিয়ার মিয়া জানান, 'বাপের সামান্য ভিটেমাটিতে বসবাস করে আসছেন। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ একবার তার বাড়িতে গিয়েছিল। খুব লজ্জা করে তিনি একটা ঘর চেয়েছিলেন। সেই সময়ের দায়িত্বশীল জাতীয় পার্টির রশিদ চেয়ারম্যানকে সঙ্গে সঙ্গে ঘর করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি বলেছিলেন, চেয়ারম্যানকে বললে দিবে না। তখন তিনি ডিসি সাহেবকে ঘর করে দেয়ার কথা বললে তিনি টিন দিয়েছিলেন। সেই টিনের ঘরেই এখনো বসবাস করছেন।

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়