অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান দেখতে কুড়িগ্রাম যাচ্ছেন ভুটানের রাজা
নিউজ ডেস্ক
অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান দেখতে কুড়িগ্রাম যাচ্ছেন ভুটানের রাজা
অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবার কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করতে যাচ্ছে ভুটান। সদর উপজেলায় ধরলা নদীর পাশে মাধবরাম গ্রামে গড়ে উঠতে যাচ্ছে ‘ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’। বাংলাদেশ ও ভুটান সরকারের যৌথ উদ্যোগে জিটুজি ভিত্তিতে গড়ে তোলা হবে এই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। তাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত স্থানটি স্বচক্ষে পরিদর্শনে যাচ্ছেন বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেওয়া দেশ ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। প্রথমবারের মতো কোনো বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধানের সফর কেন্দ্র করে উৎসব আনন্দে মাতোয়ারা কুড়িগ্রাম।
জানা যায়, ভুটানের রাজার কুড়িগ্রাম সফর তার চারদিনের সফরসূচির মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত। যে স্থানে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে, সেই স্থানটি দেখতে চেয়েছেন দেশটির রাজা। সে আলোকেই রাজার কুড়িগ্রাম সফরের সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। অবশ্য ওইদিনই ভূরুঙ্গামারীর সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে ভারত হয়ে স্থলপথে ভুটানে ফিরবেন তিনি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ধরলা সেতুর পূর্বপ্রান্তে সরকারি খাস জমির ওপর ভুটানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চলের অবস্থান। ইতোমধ্যে সদরের ভোগডাঙা ইউনিয়নের মাধবরাম মৌজার অন্তর্ভুক্ত ১৩৩ দশমিক ৯২ একর খাস জমি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) হস্তান্তর করেছে জেলা প্রশাসন। প্রয়োজনে ওই স্থানে আরও জমি অধিগ্রহণেরও সুযোগ রয়েছে।
জানা যায়, ২০২৩ সালের মে মাসে লন্ডনে ভুটানের রাজা ও রাণীর সঙ্গে দ্বি-পক্ষীয় সভায় কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রস্তাবিত ‘ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপনের জন্য জেলা শহরের পূর্বপ্রান্তে ধরলা ব্রিজের পূর্বে কুড়িগ্রাম-ভূরুঙ্গামারী সড়কের পূর্ব পাশে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে জেলা প্রশাসন ও বেজা।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে স্থানে ভুটানের অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠবে, তাতে উভয় দেশের জনগণ উপকৃত হবে। এখানে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বাণিজ্যিক হাব হওয়ার মধ্য দিয়ে আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে। এতে কুড়িগ্রামের মানুষ সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে। এর মধ্য দিয়ে এই অঞ্চল ঘিরে তৈরি হবে নতুন সম্ভাবনা।
তারা বলেছেন, ভুটানের রাজার কুড়িগ্রাম সফর আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও বাণিজ্যিক বিকাশে মাইলফলক সৃষ্টি করবে। অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হলে কুড়িগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জোন হিসেবে পরিচিতি পাবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আগামী এক দশকের মধ্যে কুড়িগ্রাম এই অঞ্চলের অন্যতম শীর্ষ জেলা হবে। এ বিষয়ে একুশে পদকপ্রাপ্ত ও স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত কুড়িগ্রামের আইনজীবী এবং সমাজকর্মী এসএম আব্রাহাম লিংকন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই ভুটানের রাজাকে কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হলে মানুষের কাছে কুড়িগ্রাম হবে অন্যতম জেলা।’
দেশের সবচেয়ে গরিব জেলার অপবাদ ঘুচে যাবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এখানকার মানুষ অলস নয়, কাজের সুযোগ পেলেই কাজ করেন। অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কর্মের সুযোগ সৃষ্টি হলে জেলার দারিদ্র্যের হার বদলে দেবে। মানুষ আরও উন্নত জীবনে যাবে।’ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কুড়িগ্রাম একটি আন্তর্জাতিক গেটওয়ে হবে, আন্তর্জাতিক হাব হিসেবে কাজ করবে। জেলার সার্বিক চিত্র বদলে যাবে।
সামগ্রিকভাবে জাগরণ তৈরি হবে। তবে সবকিছুর জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করতে হবে। রেল, নৌ, সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি লালমনিরহাট বিমান বন্দরটি চালু করে আকাশপথেও যোগাযোগ সহজ করতে হবে। এসবের মধ্য দিয়ে আগামী এক দশকে রংপুর অঞ্চলে কুড়িগ্রাম নেতৃস্থানীয় জেলায় রূপ নেবে।
অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘিরে কুড়িগ্রাম বাণিজ্যিক হাব হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. একেএম জাকির হোসেন বলেন, ‘এটি বিরাট সুখবর। কুড়িগ্রাম বাণিজ্যিক হাব হবে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও অর্থনৈতিক অঞ্চল নিবিড়ভাবে কাজ করবে। অর্থনৈতিক অঞ্চলে কৃষিভিত্তিক যেসব ইন্ডাস্ট্রি থাকবে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপে যুক্ত হবে। সবমিলিয়ে এই অঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থার চিত্র ইতিবাচকভাবে বদলে যাবে।’
ভুটান অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘিরে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে কুড়িগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আব্দুল আজিজ মিয়া বলেন, ‘অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে কুড়িগ্রামের বেকারত্ব নিরসন হবে। বাইরে থেকে যদি বিনিয়োগ হয়, উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীরা আসেন তাহলে ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সেইসঙ্গে এখানে বহুমুখী উন্নয়ন হবে।’
- Tk 12,500 announced as minimum wage for RMG workers
- মাছ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে সার্বিক সহযোগিতা করবে সরকার : মৎস্যমন্ত্রী
- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে থাকছে রেকর্ড সংখ্যক পর্যবেক্ষক
- PM opens Southeast Asia`s largest fertiliser factory in Narsingdi
- 2024 election was the fairest since 1975: PM
- দ্রুত এগিয়ে চলছে বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর কাজ
- সুষ্ঠু নির্বাচনে সব সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি
- জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি
- কর্মসংস্থানের জন্য প্রতি ঘণ্টায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যান ১৫২ বাংলাদেশি
- মানবিক নারী পুতুল ও অটিস্টিক শিশুদের নতুন ভোর