ঢাকা, রোববার   ১৯ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

প্রচারণা শেষ প্রথম ধাপের ভোট কাল

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:২৪, ৭ মে ২০২৪  

প্রচারণা শেষ প্রথম ধাপের ভোট কাল

প্রচারণা শেষ প্রথম ধাপের ভোট কাল

গতকাল শেষ হয়েছে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটের প্রচার-প্রচারণা। আগামীকাল বুধবার ১৪১টি উপজেলার ভোটে তিন কোটির বেশি ভোটার তাঁদের প্রতিনিধি বাছাইয়ে মত প্রদান করবেন। এদিন সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। ভোট উপলক্ষে এসব এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে গতকাল প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

গত ২১ মার্চ প্রথম ধাপের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। তফসিল অনুযায়ী ২২ এপ্রিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময় শেষে এ ধাপে প্রার্থী চূড়ান্ত হয় এক হাজার ৬৩৫ জন। পরের দিন (২৩ এপ্রিল) প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরু করেন প্রার্থীরা। তীব্র তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে জমে ওঠে ভোটের প্রচার-প্রচারণা।

গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত প্রচারণায় গিয়ে ভোটারদের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রার্থীরা। আগামীকাল সুষ্ঠু ভোট আয়োজনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আচরণবিধি প্রতিপালনের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ১৫০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।

আগামীকাল ১০টি অঞ্চলের অধীনে মোট ১১ হাজার ৫৬২টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে প্রথম ধাপের ভোট। এর মধ্যে ২২টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং (ইভিএম) মেশিনে। বাকিগুলোতে ভোট হবে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে। এর মধ্যে ১১ হাজার ১৩২টি কেন্দ্রে ব্যালট যাবে ভোটের দিন সকালে। দুর্গম এলাকা বিবেচনায় ২৪ উপজেলার ৪২৪টি কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানো হবে আগের দিন।

তফসিল অনুযায়ী সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা প্রথম ধাপের ভোটে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

ভোটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং প্রভাব ঠেকাতে স্বাভাবিক ও বিশেষ এলাকা বিন্যাস করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। এর মধ্যে স্বাভাবিক এলাকার প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, আনসার-ভিডিপি ও গ্রাম পুলিশ মিলিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ১৭ জন সদস্য থাকছেন। এসব এলাকার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে এ সংখ্যা বাড়িয়ে ১৮-১৯ করা হয়েছে। পার্বত্য উপজেলা এবং দুর্গম এলাকার প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য থাকছেন ১৯ জন। এসব এলাকার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে মোতায়েন থাকছে ২০-২১ জনের বাহিনী। এ ছাড়া প্রতিটি উপজেলায় থাকছে দুই থেকে চার প্লাটুন বিজিবি।

অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘আমরা কোনো কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছি না। সব কেন্দ্রই আমাদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। কোনো কেন্দ্রে প্রয়োজন পড়লে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনের ব্যবস্থা রেখেছি।’

উল্লেখ্য, বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান থাকায় প্রথম ধাপের দুই পার্বত্য উপজেলা থানচি ও রোয়াংছড়ির ভোট স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলা ও প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নারায়ণগঞ্জ সদর, কুমারখালী, গোপালপুর ও মহাদেবপুর উপজেলার ভোটের তারিখ ও ধাপ পরিবর্তন করা হয়েছে।

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৮ জন নির্বাচিত

এদিকে প্রথম ধাপের ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ২৮ জন প্রার্থী। এঁদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আটজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন ১০ জন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় পাঁচটি উপজেলায় (হাতিয়া, মুন্সীগঞ্জ সদর, বাগেরহাট সদর, পরশুরাম ও শিবচর) তিন পদে মনোনয়ন দাখিলকারী সব প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

প্রচারে এমপিদের ঠেকাতে সংসদ সচিবালয়ে চিঠি

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচারণায় সংসদ সদস্যসহ (এমপি) সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ ঠেকাতে গতকাল সংসদ সচিবালয়ে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬-এর ২২ বিধি উদ্ধৃত করে ইসির উপসচিব আতিয়ার রহমান প্রেরিত চিঠিতে বলা হয়, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এমপি ও সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় অংশগ্রহণ না করা এবং উপজেলা পরিষদ আচরণবিধির বিধান উল্লেখ করে এরূপ কার্য থেকে বিরত থাকার জন্য রিটার্নিং অফিসারকে পত্র প্রেরণ করতে নির্দেশনা দেওয়া যায় মর্মে ইসি সিদ্ধান্ত প্রদান করেছে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়