সরকারি ক্রয় আইন পরিবর্তনের সুপারিশ
নিউজ ডেস্ক
সরকারি ক্রয় আইন পরিবর্তনের সুপারিশ
দরপত্র মূল্যায়ন পদ্ধতিতে ত্রুটি থাকায় ঘুরেফিরে কাজ পাচ্ছে মাত্র কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এর ফলে যথাসময়ে এসব কাজ সম্পন্ন হচ্ছে না। আবার কোনো কোনো প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে অস্বাভাবিকভাবে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে সরকারের সংশ্লিষ্টরা দরপত্র মূল্যায়ন পদ্ধতি পরিবর্তনের পক্ষে মত দিয়েছেন। সরকারি উন্নয়নকাজে যাতে আরও বেশি প্রতিযোগিতা হয় সে লক্ষ্যে গঠিত কমিটি বেশকিছু সুপারিশ করেছে। এসব সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন-২০০৬ এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৬ সংশোধনের কথা বলা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিবকে আহ্বায়ক করে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তাতে বিভিন্ন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে সদস্য রাখা হয়েছে। কমিটির আলোচনায় বলা হয়, বিদ্যমান পদ্ধতিতে যেসব প্রতিষ্ঠান বেশি সংখ্যক কাজ করেছে তাকে বেশি নম্বর দেওয়া হয়। এতে ঘুরেফিরে কাজ করছে মাত্র কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। অনেক ক্ষেত্রে ঠিকাদার কাজও সম্পন্ন করছে না। একক ঠিকাদারের হাতে একাধিক কাজ আটকে থাকায় প্রকল্প বাস্তবায়নে যে ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে তা পরিহার করতে হলে দরপত্র মূল্যায়নের পদ্ধতির পরিবর্তন প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, সরকারি অর্থ ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনার জন্য সরকার পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন-২০০৬ এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৬ জারি করে। ই-টেন্ডারিং পদ্ধতিতে ঐ দুটি আইন ও বিধিমালা ব্যবহার করে সরকারি কাজের গুণমান উন্নয়নের কথা থাকলেও ফল হয়েছে উলটো। আগে যেখানে প্রতিটি কাজের জন্য পাঁচ থেকে ছয়টি বা ততোধিক প্রস্তাব জমা পড়ত এখন গড়ে সেখানে দুইটির মতো প্রস্তাব দাখিল হয়। অর্ধেকেরও বেশি ক্ষেত্রে প্রস্তাব দাখিল হয় একটির মতো। এর ফলে প্রতিযোগিতা না হওয়ায় কাজের গুণমান অনেক কমে যাচ্ছে। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে সংশ্লিষ্টদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একনেক বৈঠকে সরকারি কাজকে প্রতিযোগিতামূলক করতে সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনের নির্দেশ দিলেও সেটি এখনো আলোর মুখ দেখেনি।
জানা গেছে, ঠিকাদারের যোগ্যতা বিবেচনায় সরকার ম্যাট্রিক্স পদ্ধতিও চালু করে। নতুন ঠিকাদারদের কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করাই ছিল এই পদ্ধতির মূল লক্ষ্য। কিন্তু ম্যাট্রিক্স পদ্ধতির অপব্যবহারের কারণে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সিংহভাগ কাজ ঘুরেফিরে পেয়ে যাচ্ছে একই প্রতিষ্ঠান। এতে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছেন ছোট ও নতুন ঠিকাদাররা। একই ঠিকাদার একাধিক কাজ করার ফলে কাজের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারার ঘটনাও ঘটছে। এজন্য ম্যাট্রিক্স পদ্ধতি বাতিলের পক্ষে মতও দিচ্ছেন অনেকে। কারণ ম্যাট্রিক্স পদ্ধতি ব্যবহার করে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকাদারের যোগ্যতা বিচার করে। এ পদ্ধতিতে আগের কাজের অভিজ্ঞতা, সর্বোচ্চ কত টাকায় কাজ করেছেন ও কত বেশি কাজ চলমান আছে, তা বিবেচনায় নেওয়া হয়। ফলে যিনি এসব যোগ্যতার শর্ত পূরণ করতে পারেন, তিনিই কাজ পাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান, তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর এ বিষয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করা হয়েছে। সেখানে কিছু সংশোধন এবং সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথিরিটিকে (বিপিপিএ) সেগুলো পরিমার্জন করে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে।
বিপিপিএর মহাপরিচালক রুহেল হোসেন চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, ইতিমধ্যে পরিমার্জিত প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে বিষয়টি এখন কী অবস্থায় আছে—তা তিনি বলতে পারেননি।
কাজের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা তৈরির লক্ষ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ‘বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)’ এবং ‘সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট ও টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ)’ নানা ধরনের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সেসব প্রস্তাব আলোর মুখ দেখেনি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ম্যাট্রিক্স পদ্ধতিকে কার্যত ‘প্যাড কোটেশন’ বানিয়ে ফেলা হয়েছে। ফলে কার কাজের সংখ্যা কত বেশি সেই ভলিউমের ভিত্তিতে প্রায় সব কাজ ভাগিয়ে নিচ্ছে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সিন্ডিকেট। কাজের গোপন চুক্তিমূল্য আগে জানিয়ে দেওয়া হয় পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। প্রতিযোগী অন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গোপন চুক্তিমূল্য না জানতে পারায় ছিটকে পড়ছে।
ম্যাট্রিক্স পদ্ধতির কারণে প্রকল্পের প্রায় সব কাজ চলে যাচ্ছে এক জনের হাতে, অন্যদিকে তিনি আবার সে কাজটি বেশি মূল্যে বিক্রি করে দিচ্ছেন তৃতীয় পক্ষের কাছে। বেশি টাকায় কাজ নেওয়ায় কাজের মানও ঠিক রাখতে পারছে না তারা।
সওজে কাজ করেন এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, প্রকৃত কাজের সংখ্যার ভিত্তিতে কেউ কাজ পেলে সেখানে কারো আপত্তি থাকে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে প্যাড কোটেশনের মাধ্যমে বড় কাজও চলে যাচ্ছে চারটি প্রতিষ্ঠানের কাছে। তাদের মতে, প্যাড কোটেশন কোনো দরপত্র নয়। এক্ষেত্রে কোনো চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ও থাকে না। এজন্য গণপূর্ত অধিদপ্তর ও এলজিইডিসহ অন্যান্য বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ম্যাট্রিক্সের বদলে এলটিএম (লোকাল টেন্ডার মেথড) পদ্ধতিতে ফিরছে।
এদিকে ম্যাট্রিক্স পদ্ধতির অপব্যবহারের কারণে উপেক্ষিত হচ্ছে ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (পিপি) আইন-২০০৬’ এবং ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮’। কিন্তু ম্যাট্রিক্স পদ্ধতিতে প্রায় সব কাজ কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সিন্ডিকেটের হাতে চলে যাওয়ায় পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা অকার্যকর হতে চলেছে।
- Tk 12,500 announced as minimum wage for RMG workers
- মাছ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে সার্বিক সহযোগিতা করবে সরকার : মৎস্যমন্ত্রী
- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে থাকছে রেকর্ড সংখ্যক পর্যবেক্ষক
- PM opens Southeast Asia`s largest fertiliser factory in Narsingdi
- 2024 election was the fairest since 1975: PM
- দ্রুত এগিয়ে চলছে বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর কাজ
- সুষ্ঠু নির্বাচনে সব সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি
- জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি
- কর্মসংস্থানের জন্য প্রতি ঘণ্টায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যান ১৫২ বাংলাদেশি
- মানবিক নারী পুতুল ও অটিস্টিক শিশুদের নতুন ভোর