ঢাকা, শনিবার   ১৮ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

নবীজি সা.-এর চাচা আবু তালিবের মৃত্যুর সময় যা ঘটেছিল

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৩৫, ৫ মে ২০২৪  

নবীজি সা.-এর চাচা আবু তালিবের মৃত্যুর সময় যা ঘটেছিল

নবীজি সা.-এর চাচা আবু তালিবের মৃত্যুর সময় যা ঘটেছিল

মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্মের আগেই বাবাকে হারিয়েছিলেন। শৈশবে বেড়ে ওঠার দিনগুলোতেই মা-দাদাকে হারিয়ে এতীম হয়ে পড়েন। এরপর থেকে তার দেখাশোনা, লালন-পালন করেছিলেন চাচা আবু তালিব। 

শৈশবে মুহাম্মদ সা.-এর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিজের মৃত্যুর আগপর্যন্ত মুহাম্মদ সা.-কে তাকে আগলে রেখেছিলেন আবু তালিব। নবুওয়তের প্রথম দিনগুলোতে যখন কুরাইশরা নবীজির ওপর অকথ্য নির্যাতন করেছিল তখন তিনি ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। ইসলামের পক্ষে, নবীজির পক্ষে আজীবন কাজ করে গেলেও আবু তালিব ইসলাম গ্রহণ করেননি। 

তার মৃত্যুর সময় নবীজি তাকে ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিয়েছিলেন তবে কুরাইশ নেতাদের ভর্ৎসনার ভয়ে তিনি ইসলাম গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন।

আবু তালেব মৃত্যুর আগে যখন অসুস্থ হয়ে পড়লেন নবীজি নিজ চাচার কাছে গেলেন। এসময় আবু জাহল, আব্দুল্লাহ ইবনু আবী উমাইয়া প্রমুখ মুশরিক নেতৃবৃন্দ আবু তালিবের শিয়রে বসে ছিলেন।

নবীজি সা. চাচা আবু তালিবকে বললেন, 

 يَا عَمِّ قُلْ لاَ إلَهَ إلاَّ اللهُ كَلِمَةً أَشْهَدُ لَك بِهَا عِنْدَ اللهِ 

‘হে চাচা! আপনি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ কালেমাটি পাঠ করুন, যাতে আমি  আপনার জন্য আল্লাহর সুপারিশ করতে করতে পারি’।

জবাবে আবু তালিব বলেন, ‘হে ভাতিজা! যদি আমার পরে তোমার বংশের ওপর গালির ভয় না থাকত এবং কুরায়েশরা যদি এটা না ভাবত যে, আমি মৃত্যুর ভয়ে এটা বলেছি ও তোমাকে খুশী করার জন্য বলেছি, তাহলে আমি অবশ্যই তা বলতাম।’ (ইবনু হিশাম ১/৪১৮)।

নবীজি নিজের চাচাকে এই আহ্বান জানানোর পর আবু জাহল ও তার সহোদর বৈপিত্রেয় ভাই আব্দুল্লাহ ইবনু আবী উমাইয়া বারবার তাকে উত্তেজিত করে বলতে লাগলো—

أَتَرْغَبُ عَنْ مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطّلِبِ؟

 ‘আপনি কি আব্দুল মুত্ত্বালিবের ধর্ম ত্যাগ করবেন’?

জবাবে আবু ত্বালিবের মুখ দিয়ে শেষ বাক্য বেরিয়ে যায়, 

أَنَا عَلَى مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ

‘আমি আব্দুল মুত্তালিবের দ্বীনের উপরে।’ (আর-রাউযুল উনুফ ২/২২৩)। 

তখন রাসূলুল্লাহ সা. বলে উঠলেন,

 لَأَسْتَغْفِرَنَّ لَكَ مَا لَمْ أُنْهَ عَنْهُ 

‘আমি আপনার জন্য আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করে যাব। যতক্ষণ না আমাকে নিষেধ করা হয়’।

এর প্রেক্ষিতে এই আয়াত নাজিল হয়— 

 مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِيْنَ آمَنُوْا أَنْ يَّسْتَغْفِرُوْا لِلْمُشْرِكِيْنَ وَلَوْ كَانُوْا أُوْلِيْ قُرْبَى مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُمْ أَصْحَابُ الْجَحِيْمِ

‘নবী ও ঈমানদারগণের জন্য সিদ্ধ নয় যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করুক মুশরিকদের জন্য। যদিও তারা নিকটাত্মীয় হয়, একথা স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর যে তারা জাহান্নামের অধিবাসী।’ (সূরা তওবা, (৯), আয়াত :১১৩)।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়