ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

নবীজি (সা.) এর প্রতি দরূদ পড়ার ফজিলত

গাজী মো. রুম্মান ওয়াহেদ

প্রকাশিত: ২১:৫৮, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নবীজি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ শরিফ পাঠকারীর জন্য ফেরেশতারা ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পাবাত্র কোরআনুল কারিমের বর্ণনা ও হাদিসের দিকনির্দেশনায় তা প্রমাণিত।

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা নিজেই তার প্রিয় হাবিব রাসূলুল্লাহ (সা.) এর প্রতি দরূদ পড়ার দিকনির্দেশনা দিয়ে আয়াত নাজিল করেন এভাবে-

اِنَّ اللّٰهَ وَ مَلٰٓئِکَتَهٗ یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡهِ وَ سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا

অর্থ: ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ নবীর প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তার ফেরেশতাগণও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করে। হে বিশ্বাসীগণ! তোমরাও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা কর এবং তাকে উত্তমরূপে অভিবাদন কর (দরূদ ও সালাম পেশ কর)’। সূরা: আহজাব: আয়াত: ৫৬)

দরূদ পড়ার অনেক ফজিলত আছে, তবে দরূদ পাঠকারীর জন্য ফেরেশতারা দোয়া করতে থাকেন। যতক্ষণ বান্দা দরূদ পড়তে থাকেন। হাদিসে পাকে এসেছে, আমের ইবনে রবিআহ (রা.) বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে খুতবার মধ্যে এ কথা বলতে শুনেছি, ‘আমার ওপর দরূদ পাঠকারী যতক্ষণ দরূদ পড়ে ততক্ষণ ফেরেশতারাও তার জন্য দোয়া করতে থাকে। সুতরাং বান্দার ইচ্ছা, সে দরূদ বেশি পড়বে না কম’। (মুসনাদে আহমদ, ইবনে মাজাহ, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা)

দরূদ শরিফ আরবি

اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ، اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ 

দরূদ শরিফ বাংলা উচ্চারণ

‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ; কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহিম ওয়া আলা আলি ইব্রাহিম; ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ; কামা বারাকতা আলা ইব্রাহিম ওয়া আলা আলি ইব্রাহিম; ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ’।

দরূদ শরিফ বাংলা অর্থ

‘হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেভাবে আপনি ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এবং ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী। হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বংশধরদের উপর বরকত দান করুন; যেভাবে আপনি বরকত দান করেছেন ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এবং ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের বংশধরদের উপর। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অতি মর্যাদার অধিকারী’। (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)

এছাড়াও দরূদ পাঠে রয়েছে অনেক ফজিলত

> ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর দরূদ পাঠ করবে তার জন্য আমার সুপারিশ অবধারিত হয়ে যাবে’। (তাবারানি)

> রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন ওই ব্যক্তি আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে, যে আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরূদ পড়েছে’। (তিরমিজি)

> রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে আমার ওপর একবার দরূদ পড়বে আল্লাহ তার উপর ১০টি রহমত নাজিল করবেন, তার ১০টি গুনাহ ক্ষমা করা হবে এবং ১০টি (রহমতের) দরজা খুলে দেওয়া হবে’। (মুসনাদে আহমদ, নাসাঈম মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা)

> রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে মুসলমানের দান করার সামর্থ্য নেই সে যেন দোয়ায় বলে-

اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَ رَسُوْلِكَ وَ صَلِّ عَلَى الْمُؤمِنيْنَ وَالْمُؤمِنَاتِ وَالْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُسْلِمَاتِ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন আবদিকা ওয়া রাসূলিকা ওয়া সাল্লি আলাল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত ওয়াল মুসলিমিনা ওয়াল মুসলিমাত’। এটা তার জন্য জাকাত (সদকা) হিসেবে গণ্য হবে’। (ইবনে হিব্বান)

সর্বশেষ
জনপ্রিয়