ঢাকা, বুধবার   ০১ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

চট্টগ্রামে ৬৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৩৩, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

চলতি মৌসুমে চট্টগ্রামে ৬৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা ২০২১ সালের তুলনায় ১০ হাজার হেক্টর বেশি।

কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত মৌসুমে (২০২৩ সালে) চট্টগ্রামে ৬৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। বিপরীতে চাষাবাদ হয়েছে ৬৬ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে। এর আগে ২০২২ সালে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৬২ হাজার ৭৫০ হেক্টর। চাষাবাদ হয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর। ২০২১ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৭ হাজার হেক্টর। সেবার চাষাবাদ হয় ৬২ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে।

এছাড়া চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার মধ্যে বাঁশখালীতে সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৪১৪ হেক্টর, রাঙ্গুনিয়ায় ৮ হাজার ৩৮২ হেক্টর, ফটিকছড়িতে ৭ হাজার ৯৮১ হেক্টর এবং সর্বনিম্ন ১০ হেক্টর জমি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সন্দ্বীপ উপজেলায়।

এছাড়া নগরের তিন থানার মধ্যে পাঁচলাইশে ২৬২৭ হেক্টর, পতেঙ্গায় ১ হেক্টর এবং ডবলমুরিংয়ে লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে বোরো চাষাবাদ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অনেকে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষাবাদের উপযোগী করছেন। অনেকে চারা রোপণ করছেন। কেউ ব্যস্ত আইল বাঁধা নিয়ে। কৃষকরা বলছেন, বোরো আবাদ পুরোটা সেচনির্ভর। সেচের বিষয়টি নিশ্চিত করা গেলেই আবাদ এবং ফলন উভয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।

বোয়ালখালির কৃষক ইসমাইল মিয়া বলেন, সেচের অন্যতম উপকরণ ডিজেলের দামও বাড়তি। কৃষি শ্রমিকের মজুরিও অনেক বেশি। সব মিলিয়ে প্রতি কানি জমিতে বোরো আবাদে ১৩-১৪ হাজার টাকার বেশি খরচ হতে পারে। আবার ধান কাটার সময় খরচ হবে আরো চার-পাঁচ হাজার টাকার বেশি। কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে প্রতি কানি জমিতে বোরো চাষাবাদে ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হতে পারে। কিন্তু ধানের দাম সেভাবে পাওয়া যায় না। তাই বোরো চাষাবাদ নিয়ে অনেক কৃষক এখনো সংশয়ে আছেন।

তবে চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার লক্ষ্যমাত্রার ৬৮ শতাংশ জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ধান আবাদ হবে। তাই এ মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত ফলনের ব্যাপারেও আশাবাদী কৃষি বিভাগ। এছাড়া চলতি মৌসুমে বোরো আবাদে উৎসাহ দিতে চট্টগ্রামের ৪২ হাজার কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এবার নষ্ট হয়নি বীজতলাও। আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি তাদের।

চট্টগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবদুচ ছোবহান বলেন, বোরো ধানে অতিরিক্ত পানি লাগার বিষয়টি পুরোপুরি সঠিক নয়। বোরো ধান নিয়ে এক ধরনের প্রচারণা আছে, এক কেজি ধান উৎপাদন করতে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার লিটার পানি লাগে। কিন্তু ব্রি ও অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর এগ্রিকালচারাল রিসার্চ কর্তৃক এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, সেচের পানির হিসেবে কৃষক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রিত সেচ ব্যবস্থাপনায় প্রতি কেজি ধান উৎপাদন করতে এক হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ লিটার পানি লাগে। অপচয় বাদ দিয়ে শুধু ধানের উৎপাদনে প্রকৃত পানির খরচ হিসাব করলে প্রতি কেজি ধান উৎপাদন করতে ৫৫০–৬৫০ লিটার পানিই যথেষ্ট।

‘পুরো দেশে তো আমান ধান প্রধান শষ্য। কিন্তু ফলনের দিক দিয়ে বেশি হচ্ছে বোরো। বোরো চাষাবাদে পানি সেচটা গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রামে সেচের সুযোগ-সুবিধাটা একটু কম। সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে যদি পানির ব্যবস্থা করা যায়, স্লুইচ গেইটগুলো যদি সংস্কার করা যায় আর সেচের জন্য যদি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে ভবিষ্যতে বোরো চাষাবাদ আরো বাড়বে।’

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়