ঢাকা, রোববার   ১৬ জুন ২০২৪ ||  আষাঢ় ২ ১৪৩১

শেরপুর-ময়মনসিংহ যোগাযোগে নতুন দুয়ার উন্মোচন হচ্ছে

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:১৬, ২৩ মে ২০২৪  

শেরপুর-ময়মনসিংহ যোগাযোগে নতুন দুয়ার উন্মোচন হচ্ছে

শেরপুর-ময়মনসিংহ যোগাযোগে নতুন দুয়ার উন্মোচন হচ্ছে

শেরপুর জেলা শহরের কানাশাখোলা বাজারের সংযোগ সড়ক থেকে শুরু হয়ে ময়মনসিংহ মহানগরের রহমতপুরের সঙ্গে মিলিত হচ্ছে নতুন এক মহাসড়ক। চলছে সড়ক তৈরির কর্মযজ্ঞ। বর্তমানে শেরপুর থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার একমাত্র যোগাযোগের প্রধান সড়ক হলো শেরপুর-নকলা, ফুলপুর-ময়মনসিংহ। এই সড়কে দুই জেলার দূরত্ব ৬৯ কিলোমিটার। আর নতুন বিকল্প সড়কে শেরপুর-ময়মনসিংহের দুরত্ব হবে ৪৯ কিলোমিটার। অর্থাৎ নতুন সড়ক তৈরি হয়ে গেলে শেরপুর-ময়মনসিংহ যেতে দূরত্ব কমবে ২০ কিলোমিটার। অপরদিকে স্বাধীনতা পরবর্তী বৃহত্তর অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের দাবি পূরণের পাশাপাশি তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে।

শেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরকারের এই উদ্যোগ সফল হলে একমাত্র সড়ক যোগাযোগ সর্বস্ব শেরপুরের সঙ্গে ময়মনসিংহের এই সড়কে বদলে যাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা। সীমান্তবর্তী প্রান্তিক এই জেলার সঙ্গে বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ, অর্থনীতি বাণিজ্যসহ সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষেই এই মহাসড়কটি করা হচ্ছে। বৃহৎ বাজেটের দৃশ্যমান সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প এই অঞ্চলে এটাই প্রথম। এই প্রকল্পটি এক হাজার ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করছে শেরপুর ও ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কাজ সম্পন্ন হতে সময় লাগবে দুই বছরের অধিক। রাস্তার দৈর্ঘ্য হবে ৪৪.৯০৬ কিলোমিটার, প্রস্থ ৩৩.৭৮ ফুট। রাস্তাটির শেষ পর্যন্ত তৈরি করতে মাঝে মাঝে বাধা হিসেবে তৈরি হবে ছোট-বড় অন্তত আটটি ব্রীজ ও শতাধিক ছোট-মাঝারি কালভার্ড।

জানা যায়, গুরুত্ব বিবেচনায় এই সড়কটি নির্মাণের পথ সৃষ্টি করে ব্রিটিশ সরকার। ব্রিটিশ সরকার শেরপুর থেকে চন্দকোনার চরবসন্তি পর্যন্ত বিশাল এলাকাজুড়ে মহাসড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। আদালতের নির্দেশে ১৯৫২/৫৩ সালে জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়। আর বর্তমান সরকার নতুন ওই যোগাযোগের বাস্তব রূপ দিতে মেগা পরিকল্পনা করে বছর চারেক আগে। আর কাজ শুরু হয় গত বছরের ২২ আগস্টে। ব্রহ্মপুত্রই সেতু নির্মাণে বড় বাধা ছিল। আর ৩৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ময়মনসিংহের পরানগঞ্জ-রহমতপুরের ব্রহ্মপুত্র নদ ও রেল লাইনের ওপর দিয়ে নির্মাণ হচ্ছে ১৪৭১ মিটারের একটি বিশাল দৃষ্টিনন্দন সেতু। নানা বাধা বিপত্তির মধ্যে কাজ শেষ করতে সরকারের সড়ক ও জনপথ বিভাগ দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।সরকারের পরিকল্পনা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই মহাসড়কটি নির্মাণ হচ্ছে মূলত শেরপুর-ময়মনসিংহ ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার অবহেলিত বিশাল চরাঞ্চলকে ঘিরে। এতে পিছিয়ে পড়া চরাঞ্চলবাসীর জীবন-জীবিকায় নতুন গতি আনবে। এই মহাসড়ক ঘিরে চরের বুকে স্থাপিত হবে নতুন নতুন ভারি ও মাঝারি শিল্প কারখানা। বাড়বে কর্মসংস্থান ও মাথা পিছু আয়। চরাঞ্চলের বিশাল উৎপাদিত কৃষিজ পণ্য সহজেই পৌঁছে যাবে ময়মনসিংহ-ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এই মহাসড়ককে ঘিরে পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলাসহ বিশাল এই অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগসহ জীবন ব্যবস্থায় গতি আসবে।শেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাকিরুল ইসলাম বলেন, সরকারের এই মেঘা প্রকল্পকে বাস্তবায়ন করতে শেরপুর সড়ক বিভাগ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং কাজের শতকরা ৩৫ ভাগ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চর অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীর ভাগ্য পরিবর্তন হবে। শিক্ষা নগরী ময়মনসিংহ কাছে চলে আসায় মানুষজন কম খরচে উচ্চশিক্ষা নিতে পারবে।

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়