ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

পুরোনো মডেল ‌‘ক্রলিং পেগ’ চালুর দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৩০, ২৬ এপ্রিল ২০২৪  

পুরোনো মডেল ‌‘ক্রলিং পেগ’ চালুর দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

পুরোনো মডেল ‌‘ক্রলিং পেগ’ চালুর দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

ডলারের বিনিময় মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ‘ক্রলিং পেগ’ চালুর পক্ষেই অবস্থান বাংলাদেশ ব্যাংকের। বিষয়ে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল সংস্থা (আইএমএফ)। মূলত ডলার ব্যবস্থা বাজারের ওপরে ছেড়ে না দিতে এ উদ্যোগ। এর বাস্তবায়নের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপরই থাকবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের সভায় এসব বিষয় উঠে আসে। তবে এ পদ্ধতি (ক্রলিং পেগ) খুব বেশি কার্যকর না হলেও এটাকে মন্দের ভালো বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

মূলত ‘ক্রলিং পেগ’ আশির দশকে চালু হয় কয়েকটি দুর্বল অর্থনীতির দেশে। এটি হলো দেশীয় মুদ্রার সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার সমন্বয়ের একটি পদ্ধতি। এতে মুদ্রার বিনিময় হারকে একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ওঠানামা করার অনুমতি দেওয়া হয়। মুদ্রার দরের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন সীমা নির্ধারণ করা থাকে। এতে মুদ্রার দাম একেবারেই খুব বেশি বাড়তে পারবে না, আবার কমতেও পারবে না। এ পদ্ধতি ভিয়েতনাম, আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, কোস্টারিকাসহ কিছু দেশে চালু থাকলেও বাস্তবিক প্রয়োগ নেই বলে জানা যায়।

বৃহস্পতিবার আইএমএফ-বাংলাদেশ ব্যাংকের সভায় ক্রলিং পেগ চালুর বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা এর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। উপস্থাপনকৃত যুক্তিগুলো ঢাকা সফররত আইএমএফ প্রতিনিধিদলও এটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখে। সভায় সফররত প্রতিনিধিদল এটা (ক্রলিং পেগ) বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপরেই ছেড়ে দেয়। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী অর্থবছরে এ পদ্ধতি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যত কোনো উপায় না পেয়ে সাময়িকভাবে ক্রলিং পেগের ওপরে নির্ভর করা হচ্ছে। এ পদ্ধতি পরীক্ষামূলক চালুর পর বিভিন্ন দেশের ক্রলিং পেগ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হতো সে বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে। পরে বিষয়টা স্থায়ীভাবে চালু থাকবে কি না তা ডলার বাজারের অবস্থার মূল্যায়নের ওপরে।

এ বিষয়ে পলিসি রিচার্স ইনস্টিউট এবং আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তা ড. আহসান এইচ মুনসুর গণমাধ্যমকে বলেন, ডলার সংকট এখনো দেশের মধ্যে রয়ে গেছে। এর মূল কারণ ডলারের রেট বাজার ভিত্তিক না করা, যা বাংলাদেশ ব্যাংক করতে পারেনি। এ পরিস্থিতিতে অনেক পুরোনো মডেল হলো ক্রলিং পদ্ধতি সাময়িক সমাধান হতে পারে। তবে এটা কোনো টেকসই বা স্থায়ী সমাধান না। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার পদ্ধতি নিজেদের ওপরে রাখলেও পরে ঠিকই বাজারের ওপরে ছেড়ে দিতে হবে।

এর আগে বুধবার (২৪ এপ্রিল) উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংক্রোচনমূলক মুদ্রানীতির মাধ্যমে সুদের হার বৃদ্ধিসহ গৃহীত পদক্ষেপের তথ্য সংগ্রহ করেছে ঢাকায় সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিশেষ প্রতিনিধিদল। পাশাপাশি রিজার্ভ পরিস্থিতি, ডলারের বিদ্যমান রেট, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক লেনদেন বিষয়ে হালনাগাদ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ জানতে চাওয়া হয়েছে।
ব্যাংক খাতের সংস্কার, একীভূতকরণের পদক্ষেপ, রাজস্ব সংক্রান্ত পরামর্শের অগ্রগতি প্রতিবেদন নিয়েছে সংস্থাটি।

এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও পর্যবেক্ষণে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়-অংশীজনদের সঙ্গে সংস্থাটির ঋণ কর্মসূচি চলমান। তবে প্রথমদিনের বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য সংস্থার গ্রহিত পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে সংস্থাটির প্রতিনিধিদল।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়