ঢাকা, শনিবার   ১৮ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

একদিনেই ঘুরে আসুন মিনি সুন্দরবনে

আহসানুর রহমান রাজীব

প্রকাশিত: ১২:১১, ৩০ জানুয়ারি ২০২৪  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

শীত মৌসুমে সব বয়সী পর্যটকদের মুগ্ধ করতে নতুন সাজে রূপ নিয়েছে সাতক্ষীরার দেবহাটা রূপসী ম্যানগ্রোভ মিনি সুন্দরবন। সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা, সুপেও পানি, পর্যাপ্ত বসার স্থান, বিশ্রাম কক্ষ, সেমিনার রুম, রান্নার স্থান, ইন্টারনেট ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সুবিধা আছে সেখানে।

সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শীবনগর এলাকায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ইছামতি নদীর ভাঙ্গন রক্ষায় নদীর চরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গড়ে তোলা ম্যানগ্রোভ বন এখন বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। আয় হচ্ছে রাজস্ব। বিনোদন কেন্দ্রকে ঘিরে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের।

জেলা সদর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে ইছামতি নদীর তীরে শিবনগর মৌজায় প্রায় ১৫০ একর জমি জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে বিনোদন কেন্দ্রটি। এটি উপজেলার ‘রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্র’ নামে পরিচিত।

পর্যটন কেন্দ্রটিতে অধিকাংশ সময় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পারিবারিকভাবে বনভোজনের আয়োজন করা করা হয়। এই পর্যটন কেন্দ্রে সুন্দরবনের আদলে বিভিন্ন প্রজাতির বনজ বৃক্ষের চারা এনে রোপন করে বনের সৃষ্টি করা হয়েছে।

কেওড়া, বাইন, গোলপাতা, কাঁকড়া, নিম, সুন্দরী, হরকচাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ উদ্ভিদ আছে বনটিতে। বনের পাশে প্রায় ১০ একর জমির বুকে আছে অনামিকা লেক। এই লেকে আছে শান বাধানো ঘাট।

বিনোদনপ্রেমীদের জন্য আরও আছে বসার স্থান। এছাড়া ঘোড়ার পিঠে চড়া ও ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের জিরো পয়েন্টে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে চড়ে ঘুরে দেখার সুযোগ আছে। শিশুদের আনন্দ দেওয়ার জন্য আছে বিভিন্ন রাইড।

দেবহাটা উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে ও একটি আকর্ষণীয় বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে এরই মধ্যে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ম্যানগ্রোভ বনে যাওয়ার ২টি রাস্তার মধ্যে একটি পিচঢালা রাস্তা। অপরটি ডাবল হেয়ারিং বন্ড রাস্তা রয়েছে।

এছাড়া সমগ্র বনটির উপভোগের জন্য বনের ভেতর দিয়ে ট্রেইল ব্যবস্থা, বনের লেকে বোটের ব্যবস্থাও আছে। এছাড়া বেশ কিছু কাজ চলমান আছে। ঘুরতে এসে রাত্রিযাপনসহ বিভিন্ন সুবিধা রাখা হয়েছে।

বর্তমান স্থানটিতে প্রবেশ করতে হলে ২০ টাকা মূল্যের ফি দিতে হয়। যার পুরো টাকা সরকারি রাজস্ব তহবিলে জমা হয়। এখান থেকে কেন্দ্রটির উন্নয়নে অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে।

বিনোদন কেন্দ্রটির ম্যানেজার সোহেল রানা জানান, সার্বিক নিরাপত্তা ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমারা নিয়মিত কাজ করছি। এখানে ছুটির দিনে অসংখ্য মানুষ বেড়াতে আসেন। জায়গাটি নদীর তীরে হওয়ায় এখান থেকে ভারতের টাকি পৌরসভা দেখা যায়।

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই এখানে পিকনিক করতে আসছেন। তিনি বলেন, ‘সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার বর্তমান উপ-সচিব আ.ন.ম তরিকুল ইসলামের উদ্যোগে বনটি গড়ে তোলা হয়।’

‘পরবর্তী সময়ে সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার বর্তমান উপ-সচিব হাফিজ আল-আসাদ বনটির সৌন্দর্য বাড়াতে ও ব্যাপক উন্নয়ন ঘটাতে কেন্দ্রটি বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তোলেন। এরপর পর্যয়ক্রমে বিভিন্ন নির্বাহী অফিসারগন এটির উন্নয়ন করছেন।’

দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সব বয়সী মানুষের উপযোগী বিনোদনকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন সংযোগ ঘটানো হয়েছে।’

‘এখানে আসলে সুন্দরবনে যাওয়ার অনেকটাই স্বাদ মেটানো যাবে। নির্মল বাতাসে মনোমুগ্ধকর বনটিতে আসা ও উপভোগ করার জন্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলমান রয়েছে। পর্যটকদের আকর্ষিত করতে আগামীতে আরো কিছু উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ
জনপ্রিয়