ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কবিতা: মায়েদের হার্বেরিয়াম

মেহেরুন্নেছা

প্রকাশিত: ১২:৪৩, ১৮ মে ২০২৩  

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

তোমার প্রতিটি রোমকূপের রন্ধ্রে রন্ধ্রে উৎকীর্ণ আছে
একটি দীর্ঘ প্রসবের
ব্রাহ্মী লিপি।
তোমার মহাকাশে, তোমার জঠরে
ডুবতে ডুবতে
আমি এবং আমরা
স্ফূরিত হই
অস্তিত্বহীনতা থেকে
অস্তিত্বের মহীরুহে।

তোমার প্রতিটি রোমকূপের রন্ধ্রে রন্ধ্রে উৎকীর্ণ আছে
একটি দীর্ঘ প্রসবের
ব্রাহ্মী লিপি।
তোমার মহাকাশে, তোমার জঠরে
ডুবতে ডুবতে
আমি এবং আমরা
স্ফূরিত হই
অস্তিত্বহীনতা থেকে
অস্তিত্বের মহীরুহে।

সেই তুমি
হাজারো বটের ঝুরি নিয়ে
যেন বর্ণহীন, চিরন্তন বনসাই।
শিউরে উঠি!
শিউরে উঠি
এ কথা ভেবে যে
মৃত্যুর ঘনঘটায়
সহজাত কক্ষপথে একদিন
তুমি কীভাবে হলে
বিপুলা সর্বনাশী।

সেদিন জল আর রুধিরাক্ত ছিল
আমার বোধহীন কায়া,
যেন গর্ভফুলের কাব্য হয়ে উঠেছিলাম আমি,
আমার পৃষ্ঠতল স্পর্শ করেছিল
সূতিকাগারের জন্য বরাদ্দ
শুভ্র পুষ্পধারী শীতল
শীর্ণ পাটিখানি।

হিমশৈলীর হিম,
লুপ্ত করে নেয়, যে
পরিব্রাজকের ভাষা আর দেশ,
সেই হারানো দ্যোতনা
লেপ্টে থাকে, তোমার
তামাটে মুখের বলিরেখায়।
শিমুলের জ্যোৎস্নার মতো, তোমার
আঁচলে অবগাহন করে সে,
খুঁজে পায় হারানো ক্যানভাস।

মনে পড়ে?
মনে পড়ে কি মা?
চিরকাল তুমি আমায় বলতে,
তোকে মিশরীয় সভ্যতার
স্ফিংস হতে হবে না;
তুই আমার
আত্মরতিতে মগ্ন
স্বচ্ছ সরোবরের নীলাকাশ।

আমি নিশ্চিত,
এবং নিশ্চিত। যদি একদিন
এই নক্ষত্রের পতন হয়,
যদি একদিন
বৈশ্বিক উষ্ণতা পৃথিবীকে খুবলে খায়,
যদি একদিন
পৃথিবীর সর্বশেষ মানুষটির জন্য
একবিন্দু অম্লজান না থাকে,
তবে সেই মানুষটিও বেছে নেবে
তার মৃত মায়ের কোল,
আশ্রয় নেবে, এখানে,
কালশিটে প্রান্তরে
সব মায়ের হার্বেরিয়ামে।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়