ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ভোট চুরি জিয়াউর রহমানই শুরু করেছে: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৩৪, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩  

জিয়াউর রহমান

জিয়াউর রহমান

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘খুব অবাক লাগে বিএনপি যখন গণতন্ত্রের কথা বলে, ভোটের অধিকারের কথা বলে। ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া, কারচুপি করা, সিল মারা, হ্যাঁ, না ভোট দিয়ে বাক্স ভরা, এগুলো কে করেছে? জিয়াউর রহমানই শুরু করেছে। জিয়াউর রহমান অবৈধ ক্ষমতা দখল করে এসবের শুরু করেছে।’ 

গতকাল রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জোর করে ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে জনরোষের আন্দোলনে ১৯৯৬ সালে ভোট চুরির অপবাদ নিয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এদের চরিত্র কখনো বদলাবে না। জনগণের কল্যাণ-মঙ্গলের কথা এরা চিন্তা করে না। নিজেদের কথাটা ভালো বোঝে। যখনই ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভোট চুরি করা, অর্থ-সম্পদ বানানো, বিদেশে অর্থ পাচার করা, মানি লন্ডারিং করা, এমনকি এতিমের অর্থ পর্যন্ত আত্মসাৎ করেছে। আর তাদের কাছ থেকে বড় বড় কথা শুনতে হয়। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট কারচুপি করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। সেই সময়ে ওই নির্বাচন কিন্তু কেউ মেনে নেয়নি। জনগণের আন্দোলনের কারণে খালেদা জিয়া ৩০ মার্চ পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এটাও সবাইকে মনে রাখতে হবে। ভোট চুরি অপবাদ মাথায় নিয়ে খালেদা জিয়া বিদায় নেয়।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নাম নিয়ে ২০১৩ সাল থেকে মানুষকে পুড়িয়ে মেরে আন্দোলন করে তারা। বাসে, গাড়িতে, ট্রেনে লঞ্চে—সব জায়গায় তাদের আগুন। তাদের এই অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার আজকে কত মানুষ পোড়া শরীর নিয়ে কাতর, অসহায় জীবন যাপন করে। নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিল, পারেনি। জনগণ সঙ্গে না থাকলে পারা যায় না। 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নির্বাচন তারা (বিএনপি) করবে কীভাবে? একটা নমিনেশন দেয় লন্ডন থেকে, একটা আসে পল্টন থেকে, আরেকটা আসে গুলশান থেকে। এখন যখন লন্ডনেরটা আসে তখন পল্টনেরটা চলে যায়। যখন পল্টনেরটা আসে তখন গুলশানেরটা যায়। সকালে একটা দেয় তো বিকেলে আরেকটা দেয়। এভাবে তাদের নির্বাচন পল্টনও গেল, লন্ডনও গেল, গুলশানও গেল। তা-ও কয়েকটি আসন পেয়েছিল। সংসদে তাদের যে সদস্য ছিল, আমরা কিন্তু তাদের কথা বলার সুযোগ দিতাম। কারণ, আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম আমাদের কথা বলতে দিত না। এমনকি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিষয় নিয়ে একবারও কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। বিরোধীদলীয় নেতা হয়েও আমি কখনো কথা বলার সুযোগ পেতাম না। যে কারণে আমরা গণতন্ত্রের চর্চার করি।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘রেললাইন কেটে মৃত্যুর ফাঁদ পেতে তারা মানুষ হত্যা করেছে। জিয়া আর খালেদা জিয়ার মতো লন্ডনে বসে হুকুম দেয়। আমি বুঝি না বিএনপি নেতারা কী করছে। ওখান থেকে হুকুম দেয় আর এখান থেকে আগুন দেয়। এই আগুন নিয়ে খেলা, এই খেলা ভালো না বাংলাদেশের মানুষ এটা মেনে নেবে না।’ 

রেললাইন কাটা এবং অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা হরতাল ডেকে ঘরে চুপ করে থাকে। এত টাকার উৎস কোথায়? হাওয়া ভবন খুলে অস্ত্র চোরাকারবারি, মানি লন্ডারিং করে টাকা পাচার করেছে। যারা রেললাইন কাটতে যাবে এদের ধরিয়ে দিন। এদের ধ্বংসাত্মক কাজ চলতে পারে না।’

আওয়ামী লীগকে ষড়যন্ত্র করে উৎখাত করা সহজ নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এ দেশের মাটি-মানুষের সংগঠন। এর শেকড় অনেক গভীরে। এভাবে আওয়ামী লীগকে উৎখাত করতে পারবে না। সংগ্রাম করে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা, নির্বাচন সংস্কার আমরা করেছি। জনগণের ভোটের অধিকার তাদের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। অগ্নিসন্ত্রাস আর খুন করে জনগণের মন পাওয়া যায় না।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ শত প্রতিকূলতায় মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলে এবং আওয়ামী লীগের ওপর যত আঘাত আসুক; আওয়ামী লীগই জনগণের হয়ে লড়াই করে।

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়