ঢাকা, শুক্রবার   ০৩ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

কাঁকড়া চাষ: শুধু সাতক্ষীরাতেই রফতানি আয় বছরে ৮৬ লাখ ৯৮৪ ডলার

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৪৬, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বাণিজ্যিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী পণের তালিকায় স্থান পেয়েছে কাঁকড়া। এরই মধ্যে রফতানিযোগ্য এ কাঁকড়া চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন সাতক্ষীরার চাষিরা। হিমায়িত চিংড়ির মত কাঁকড়াও ইউরোপ ও আমেরিকারসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি করে লাখ লাখ টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে বলে জানায় মৎস্য অধিদফতর।

সাতক্ষীরা মৎস্য অধিদফতরের দেয়া তথ্য মতে, এ জেলায় বাণিজ্যিকভাবে কাঁকড়া চাষ ও রফতানি হচ্ছে ২০১৪ সাল থেকে। এখানে বছরে প্রায় তিন হাজার মেট্রিক টন কাঁকড়া উৎপাদন হয়। এর একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রফতানি হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। 

এর মধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরে নরম কাঁকড়া রফতানি হয়েছে ৫৬৭ মেট্রিক টন, যার মূল্য ৬৭ লাখ ৩৫ হাজার ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে কাঁকড়া রফতানি হয়েছে ৫১৮ মেট্রিক টন, যার রফতানি মূল্য ৬৯ লাখ ৫১ হাজার ডলার। ২০২১-২২ সালে এটি রফতানি হয় ৮০২ মেট্রিক টন, যার রফতানি মূল্য ১ কোটি ১৬ লাখ ৫১ হাজার ডলার এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে রফতানি হয়েছে ৬২২ মেট্রিক টন, যার রফতানি মূল্য ৮৬ লাখ ৯৮৪ ডলার।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে সুন্দরবন নির্ভরতা কমিয়ে সরকারি-বেসরকারিভাবে হ্যাচারিতে কাঁকড়া পোনা উৎপাদনের প্রক্রিয়া চলছে। সাতক্ষীরার সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকার নোলা পানিতে চিংড়ি চাষের পাশাপাশি সফটসেল কাঁকড়া চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। 

সুন্দরবনের ওপর নির্ভর করে উপকূলীয় এলাকায় গড়ে ওঠেছে হাজার হাজার সফটসেল কাঁকড়ার খামার। তবে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুমের কারণে প্রতি বছর ৫ মাসের অধিক সময় সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণের পাস বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েন চাষিরা। 

জেলার সুন্দরবনসংলগ্ন উপজেলা শ্যামনগরে ৩২০ হেক্টর জমিতে কাঁকড়ার চাষ হয়ে থাকে। সেখানে গত অর্থবছরে দুই হাজার মেট্রিক টন সফটসেল’ কাঁকড়া ও হার্ডসেল কাঁকড়া উৎপাদন হয়। এর মধ্যে জীবন্ত হার্ডসেল কাঁকড়া ও সঙ্গে সঙ্গে সফটসেল কাঁকড়ার সবই বিদেশে রফতানি করে অর্জিত হয় প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা।

কাঁকড়া শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বিকল্প উপায়ে স্বল্পমূল্যে কাঁকড়ার পোনা সরবরাহের পাশাপাশি ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের দাবি চাষিদের।

তারা জানান, অল্প জমিতে কাঁকড়া চাষ করে অধিক লাভবান হচ্ছেন তারা। কাঁকড়ার চাষ করে তাদের সংসারে সফলতা এসেছে। ছেলে-মেয়েদের ভালোভাবে তারা লেখাপড়া শেখাতে পারছেন। তাই কাঁকড়া চাষে তাদের আগ্রহ বেশি।

কাঁকড়া চাষে দরিদ্র জনগোষ্ঠী জড়িত উল্লেখ করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনিছুর রহমান জানান, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে সরকারি-বেসরকারিভাবে হ্যাচারিতে কাঁকড়া পোনা উৎপাদন প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। তাতে একদিকে যেমন বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হবে, তেমনি কর্মসংস্থান বাড়বে।

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়