ঢাকা, মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

দেড়শত বছর পর কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর পৌরসভা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৫৩, ৮ এপ্রিল ২০২৪  

দেড়শত বছর পর কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর পৌরসভা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত

দেড়শত বছর পর কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর পৌরসভা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত

প্রতিষ্ঠার প্রায় ১৫৫ বছর পর কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর পৌরসভাকে ‘খ’ শ্রেণি থেকে ‘ক’ শ্রেণিতে অর্থাৎ দ্বিতীয় থেকে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ। এর আগে ১৯৯৭ সালে বাজিতপুর পৌরসভা দ্বিতীয় শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
৩১ মার্চ রোববার স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর-২ শাখার উপ-সচিব ড. সালমা সিদ্দিকা রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এ প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এই প্রজ্ঞাপনে ৮১১ নম্বর পরিপত্র অনুযায়ী কিশোরগঞ্জ জেলাধীন বাজিতপুর পৌরসভাকে ‘খ’ শ্রেণি থেকে ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি অবগত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক, বাজিতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বাজিতপুর পৌরসভার মেয়রসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এই প্রজ্ঞাপনের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।
পহেলা এপ্রিল সোমবার মন্ত্রণালয় থেকে বাজিতপুর পৌরসভা কার্যালয়ে চিঠি পৌঁছলে মেয়র, কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আনন্দের অনুভূতি প্রকাশ পায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. আফজাল হোসেনকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়ে নাগরিকদের ব্যাপক পোস্ট দেখা যায়। তারা সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব দেন বাজিতপুর পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হোসেন আশরাফকে।
উল্লেখ্য, ঢাকা জেলার ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন জনপদ বাজিতপুর। ১৮২৩ সালে বাজিতপুর থানা স্থাপিত হয়। ১৮৬৯ সালে ৮ এপ্রিল ময়মনসিংহ ও বাজিতপুর নামে দুটি মিউনিসিপালিটি গঠিত হলেও বাজিতপুরে ভিত্তিস্থাপন হয় ময়মনসিংহের একদিন পূর্বে। প্রথম দিকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পদাধিকার বলে গঙ্গাধর তর্কালঙ্কার বাজিতপুর পৌরসভার প্রথম প্রেসিডেন্ট হন। ১৯১৪ সালে পৌরসভার প্রথম মুসলিম প্রেসিডেন্ট হন সৈয়দ নুরুল হুদা। ১৯৫৯ সালে টাউন কমিটি গঠিত হয়। ১৯৭২ সালে টাউন কমিটি বিলুপ্ত করে পৌরসভায় রূপান্তরিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালে বাজিতপুর মিউনিসিপালিটির আয়তন ছিল দুই বর্গমাইল। লোকসংখ্যা ছিল চার হাজারের মত। ১৭৮১ সালে রেনেলের মানচিত্রে বাজিতপুরকে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই মানচিত্রে কিশোরগঞ্জ নামে কোন স্থানের উল্লেখ ছিল না।
বাজিতপুর পৌরসভার বাসিন্দা অধ্যাপক ইন্দ্রজিৎ দাস বলেন, বাজিতপুর পৌরসভা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ার ফলে নাগরিক সেবার পাশাপাশি দেড়শত বছরের লালিত স্বপ্ন ’বাজিতপুর জেলা’ তার শক্ত ভিত অর্জন করল। পৌর মেয়র ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আফজাল হোসেনের উচিত বাজিতপুরে গ্যাস পাইপ লাইন স্থাপন ও বাজিতপুর দেওয়ানী আদালতকে সাব-জজ রূপান্তর করার পাশাপাশি বাজিতপুর জেলা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করা ।
বাজিতপুর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. নওশাদ আলম জানান, ৯.৮৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বাজিতপুর পৌরসভাটির মোট জনসংখ্যা ১ লক্ষ ১৯ হাজার। যার ভোটার সংখ্যা ২৮ হাজার। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌরসভার মোট সড়কের পরিমাণ ১২১ কি.মি। প্রায় সব ধরণের ব্যাংকিং, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এনজিও, সামাজিক ও অন্যান্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এই পৌরসভার জনগণের সেবায় নিরলস ভাবে সেবা প্রদান করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হোসেন আশরাফ বলেন, আমি মেয়র হওয়ার পর থেকেই চেষ্টা ও তদবির চালিয়ে যাচ্ছিলাম পৌরসভাটিকে দ্বিতীয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করতে। অবশেষে আমার ২য় মেয়াদে ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত করতে পেরেছি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আফজাল হোসেনসহ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
এখন এই পৌরসভাকে একটি মডেল পৌরসভা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন, নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করে এগিয়ে নিতে তিনি সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন।

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়