বিয়ে ছাড়াই সন্তান জন্ম দেওয়ার অনুমোদন চীনের!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ জনবহুল দেশ চীনে গত ৬০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো কমেছে জনসংখ্যা। বিষয়টি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন দেশটির সরকার। জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে এরইমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে চীন।
এর অংশ হিসেবে এবার সিচুয়ান প্রদেশে ‘বিয়ে ছাড়া সন্তান জন্ম দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা’ তুলে নিয়েছে চীন। সিচুয়ানে প্রায় ৮ কোটি মানুষ বসবাস করেন। শুধু তাই নয় ওই প্রদেশে এখন যত খুশি তত সন্তান নিতে পারবেন বিবাহিত দম্পতিরা।
গতকাল সোমবার (৩০ জানুয়ারি) সিচুয়ানের স্বাস্থ্য কমিশন ঘোষণা দিয়েছে, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রাদেশিক সরকারের তালিকায় যে কেউ জন্মনিবন্ধন করাতে পারবেন। আগে বিবাহিত নারী-পুরুষ সর্বোচ্চ দু’টি সন্তানের জন্মনিবন্ধন করাতে পারতেন।
সিচুয়ানের প্রাদেশিক সরকার জানিয়েছে, এ নিয়ম আগামী পাঁচ বছর বলবৎ থাকবে।
চীনের জন্ম নীতিতে অবশ্য অবিবাহিত নারীদের সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। এ ব্যাপারে স্পষ্টভাবে কোনো নিষেধাজ্ঞাও নেই। তবে কোনো নারী যখন জন্মপূর্বকালীন সরকারি সেবা, মাতৃত্বকালীন ছুটির বেতনের সুবিধা নিতে যান তখন তাদের বিয়ের প্রমাণ দেখাতে হয়।
এছাড়া যেসব নারী বিয়ে ছাড়া সন্তান জন্ম দিতে চান তাদের ‘হুকোও’ নামের একটি সেবা পাওয়ার জন্য বড় অংকের জরিমানা গুণতে হয়। এই হুকোওর মাধ্যমে শিশুরা শিক্ষা ও সামাজিক সেবা পেয়ে থাকে।
আশির দশকে চীনে এক সন্তান নীতি গ্রহণ করা হয়। কেউ যদি এ নীতি ভঙ্গ করতেন তাহলে তাকে পেতে হতো কঠোর শাস্তি। মূলত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দেশটি। তবে পরবর্তীতে এটি ভুল প্রমাণিত হয়। আর সেই ভুল বুঝতে পেরে ২০১৬ সালে এই নীতি থেকে সরে আসে চীন।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, ২০২২ সালের শেষে দেশটির লোকসংখ্যা ১৪১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার ছিল, কিন্তু এক বছর আগে সংখ্যাটি ১৪১ কোটি ২৬ লাখ ছিল।
২০২১ সালে প্রতি হাজারে জন্মহার ছিল ৭ দশমিক ৫২, গত বছর তা কমে ৬ দশমিক ৭৭ এ নেমে এসেছে; দেশটির রেকর্ডে এটিই সর্বনিম্ন জন্মহার।
চীন গত বছর ১৯৭৬ সালের পর থেকে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর হারও রেকর্ড করেছে, ২০২২ সালে দেশটি প্রতি হাজারে ৭ দশমিক ৩৭ মৃত্যু তালিকাবদ্ধ করেছে; যেখানে ২০২১ সালে মৃত্যুর হার ছিল ৭ দশমিক ১৮।
মূলত ১৯৮০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত বলবৎ থাকা চীনের এক সন্তান নীতির কারণে জনসংখ্যা কমতে শুরু করেছে, এর পাশাপাশি পড়াশোনার আকাশচুম্বি খরচও অনেক চীনা পরিবারকে এক সন্তানের বেশি না নিতে বাধ্য করেছে, এমনকী এ কারণে অনেকে কোনো সন্তানই নিচ্ছেন না।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টানা তিন বছর ধরে কঠোর জিরো-কোভিড নীতি বজায় রাখার পর হঠাৎ করে তা তুলে নেওয়ায় চীনের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি হয়েছে, এটিও জন্মহার হ্রাসে ভূমিকা রাখছে।
চীনের স্থানীয় সরকারগুলো ২০২১ সাল থেকেই একের অধিক সন্তান নিতে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে; এগুলোর মধ্যে কর ছাড়, মাতৃত্বকালীন ছুটি দীর্ঘয়িত করা এবং ভর্তুকি মূল্যে বাড়ি দেওয়া অন্যতম। কিন্তু এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও দীর্ঘদিনের ওই ধারা পরিবর্তিত হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
সর্বশেষবার চীনের জনসংখ্যা কমেছিল ১৯৬০ সালে। ওই বছর মাও সে তুংয়ের বিপর্যয়কর কৃষি নীতি ‘গ্রেট লিপ ফরওয়ার্ডের’ কারণে দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছিল দেশটির মানুষ।
তবে এরপর দেশটিতে জনসংখ্যা বাড়া শুরু করে। কিন্তু অধিক জনসংখ্যার ভয়ে ১৯৮০ সালে চীন বিতর্কিত ‘এক শিশু’ নীতি গ্রহণ করে। যার কারণে জনসংখ্যা অনেক বেশি হ্রাস পায়। ভুল উপলব্ধি করতে পেরে ২০১৬ সালে এই নীতি পরিহার করে দেশটি। বর্তমানে অঞ্চলভেদে চীনে কোনো দম্পতি চাইলে তিন ছেলে-মেয়েও নিতে পারেন।
- মিশরে চার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর কৃতিত্ব
- হেঁচকা টানে শ্বশুরের অণ্ডকোষ ছিড়লো ছেলের বউ!
- মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে এলো সোনার খণ্ড
- সিঙ্গাপুরে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত
- শিম্পাঞ্জির ছানা চুরি করে মুক্তিপণ দাবি!
- নগ্ন ছবি ও ভিডিও ছড়ানোর কারণে মিয়ানমারের মডেলের জেল
- বিশ্ব সংকটের মধ্যেই আরো উত্তেজনা সৃষ্টি করল উত্তর কোরিয়া
- ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে ইতিহাস তৈরি করল উত্তর কোরিয়া
- কোভিডের চাইতেও ভয়াবহ ভাইরাস তৈরি করছে চীন!
- ইউরোপে পর্যটনে বদলের আভাস, ভিসা লাগবে আমেরিকানদের